নোয়াখালীর হাতিয়ায় বিএনপির একপক্ষের ঈদ পুনর্মিলনী সমাবেশে যাওয়ার পথে অন্য পক্ষের হামলা ও উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২৫ জনকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে গুরুতর আহত চারজনকে সেখান থেকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের বলীর পুলের পশ্চিম পাশে রাস্তার মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন—তমরদ্দি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সানা উল্লাহ, আনোয়ার হোসেন, নুর ইসলাম, খোকন, দিদার, এনায়েত হোসেন, জাহাজমারা ইউনিয়নের মো. হানিফ, বুড়িরচর ইউনিয়নের রুবেল, চরকিং ইউনিয়নের নোমান, সাগরসহ ৩৫ জন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তমরুদ্দি বাজারে মঙ্গলবার বেলা ৩টায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি অংশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীমকে। এদিন আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে শামীমের অনুসারীরা অনুষ্ঠানে আসা শুরু করেন।
পথে তমরুদ্দি বাজারে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শামীমের অনুসারীদের অভিযোগ, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল আজিমের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ নিয়ে বাজারের আশপাশে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ৩৫ জন আহত হন। এর মধ্যে ২৫ জন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
হামলার বিষয়ে জানতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের মুঠেফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা বলেন, দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের খবর শুনেছি। তবে আমাদের কাছে এখনো কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, হামলায় আহতদের দেখতে রাত পৌনে ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। সেখানে চিকিৎসারতদের তিনি সার্বিক খোঁজখবর নেন।
এ সময় গণমাধ্যমকে হান্নান মাসউদ বলেন, হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে সেখানে চিকিৎসারত রোগীদের খোঁজখবর নিয়েছি। এখানে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের সঙ্গেও কথা বলে তাদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি। কোনো ধরনের সংঘাত সংঘর্ষ আমাদের কাম্য নয়।