শিরোনাম
ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ২৪৪ জন আক্রান্ত গাইবান্ধায় ট্রাকচাপায় শিক্ষার্থী নিহত টিসিএ রংপুরের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা রংপুরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হাড়িভাঙ্গা আমের আনুষ্ঠানিক বাজারজাত শুরু – মতবিনিময় সভায় নেতৃস্থানীয়দের অংশগ্রহণ গাইবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ. লীগ নেতা বাবলু গ্রেফতার রংপুরের পীরগঞ্জে শেখ হাসিনার নাতি পিন্টু গ্রেপ্তার, পাঠানো হয়েছে কারাগারে হাড়িভাঙ্গা আমে রংপুরের অর্থনীতি সমৃদ্ধি হচ্ছে। হাড়ি ভাঙ্গা আম আমাদের রংপুরের গর্ব: জেলা প্রশাসক আমরা যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছি, এখনই জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নয় : অর্থ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করলেন ইশরাক হোসেন
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ৮৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগ, সাক্ষী ৮১

ডেস্ক রিপোর্ট / ৩২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ১ জুন, ২০২৫

২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব ‘মনসুন রেভুল্যুশন’ বা ‘বর্ষা বিপ্লব’ চলাকালে সংঘটিত ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রোববার (১ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো আলোচিত মামলা ‘চিফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনা গং’।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলমান গণআন্দোলনের সময় নির্বিচারে সহস্রাধিক মানুষ হত্যায় তিনি নির্দেশদাতা ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সমর্থনে ১৩৫ পৃষ্ঠার মূল অভিযোগপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে আরও ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার তথ্যপ্রমাণ, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিডিও, অডিও কল রেকর্ডিং, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি ও অন্যান্য দালিলিক উপাত্ত।

চিফ প্রসিকিউটর জানান, মামলায় তারা যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করবেন, তার মধ্যে রয়েছে- প্রত্যক্ষদর্শী ও জীবিত ভিকটিমদের সাক্ষ্য, ভিডিও ও অডিও ক্লিপস, সিসিটিভি ও ড্রোন ফুটেজ, ফরেনসিক বিশ্লেষণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী, সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যচিত্র, আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট এবং সরকারি ডকুমেন্টস।

মামলার অন্যান্য দুই অভিযুক্ত হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, এই তিনজনের বিরুদ্ধে রয়েছে গণহত্যা, নির্বিচার হত্যা, উসকানি ও সহিংসতায় প্ররোচনার সুস্পষ্ট প্রমাণ।

প্রসিকিউটর বলেন, ‘এই বিচার শুধু প্রতিশোধ নয়, এটি এক জাতির ন্যায়ভিত্তিক পুনর্জাগরণের শপথ। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পথে ফিরে যাওয়ার জন্য এটি একটি ইতিহাস-গঠনকারী অধ্যায়।’

বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন বর্ষা বিপ্লবের ভিকটিমদের, যারা ‘আর কখনও তাদের পরিবারের কাছে ফিরবেন না’, স্মরণ করেন সেই সব তরুণদের যারা চোখ, হাত, পা কিংবা শরীরের অঙ্গ হারিয়েছেন এবং স্মরণ করেন সেই সকল নির্ভীক মানুষদের, যাদের আত্মত্যাগের ফলে একটি নতুন ভোরের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে উদ্ভূত হয় ব্যাপক ছাত্র-যুব আন্দোলন। কোটা সংস্কার, বৈষম্য ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আয়োজিত এ আন্দোলন ‘বর্ষা বিপ্লব’ নামে পরিচিতি পায়। অভিযোগ রয়েছে, এই আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়ঙ্কর অপব্যবহার করা হয়, যার ফলে শত শত মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হন, সহিংসতার শিকার হন হাজারো নিরীহ নাগরিক।আন্তর্জাতিক মহলেও এ ঘটনাগুলো ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইন ও বাংলাদেশের ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের আওতায় এ বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ট্রাইব্যুনালের ইতিহাসে এতো বড় পরিসরের অভিযোগপত্র এর আগে কখনো দাখিল হয়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে মোট ৮১ জনকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনের সময় আহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজন, চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক সদস্য এবং তদন্ত কর্মকর্তারা। এর আগে ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা, যার ভিত্তিতে প্রস্তুত হয় অভিযোগপত্র।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ