শিরোনাম
ইসরায়েলের ২৮টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবি ইরানের ইসরায়েলি ভূখণ্ডে জোড়ালো হামলা; আবারও ৮ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইরান লালমনিরহাটের পাটগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত-১ ‘জামায়াত আগে ছিল হেলমেট বাহিনী, এখন তারাই টুপি লাগিয়ে হামলা করে’ ইরানের আকাশ এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের বাংলাদেশ দূতাবাসের, প্রাণে বেঁচেছেন কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে দুজনের মৃত্যু; শনাক্ত ১৮ নিজের নামে স্মার্টফোন আনছেন ট্রাম্প রংপুরে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু, প্রস্তুত আইসোলেশন ওয়ার্ড ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ২৪৪ জন আক্রান্ত
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন

কোরবানির ঈদ: গাইবান্ধার হাটগুলো জমতে শুরু করলেও ক্রেতা কম

ডেস্ক নিউজ : / ৩৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ১ জুন, ২০২৫

কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসায় জমে উঠতে শুরু করেছে গাইবান্ধার গরু-ছাগলের হাটগুলো। তবে এখনো আশানুরুপ ক্রেতার দেখা মিলছে না; কেনাবেচাও কম। দুয়েক দিনের মধ্যেই তা বাড়বে বলে আশা বিক্রেতা ও হাট ইজারাদারদের।

এবার জেলার সাত উপজেলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য গরু-মহিষ-ছাগল ও ভেড়া বেচাকেনার জন্য মোট ৪১টি হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী ২৬টি ও অস্থায়ী হাট ১৫টি।

শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা সদরের লক্ষ্মীপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির পশু দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে আছে হাট। ছোট-বড় ও মাঝারি সাইজের প্রচুর গরু ও ছাগল বিক্রির জন্য হাটে আনা হয়েছে। কিন্তু কেনাবেচা কম।

হাটে আসা সাদুল্লাপুর উপজেলার পুরাণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের খামারি আব্দুল লতিফ বলেন, “হাটোত গরু নিয়্যা আচচি বেচপার। গরু দুটা বেচলে নাব (লাভ) হবে। তাক দিয়্যা বাড়িত ঘর ভালো করমু। কিনতু কেনার নোক নাই। এবার এখনও হালচাল কিচু বোজা যাচ্চে না।”

আগের দিন দুপুরে একই উপজেলার দারিয়াপুর হাটে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। প্রচুর পশু ও বিক্রেতা হাটে থাকলেও, ছিল না ক্রেতা।

এই হাটে গরু নিয়ে এসেছেন মজনু মিয়া। তার বাড়ি উপজেলার চাঁপাদহ গ্রামে। দীর্ঘদিন থেকে তিনি গরু মোটাতাজাকরণে যুক্ত। বাছুর কিনে ৫-৬ মাস লালন-পালন করে ঈদের সময় বিক্রি করেন। এ বছর তিনি চারটি বাছুর লালন-পালন করেছেন।

মজনু মিয়া নিজের ভাষায় বলেন, “হাটোত এবার ম্যালা গরু-ছাগোল উঠছে। কিন্তু বেচা-বিক্রি কম। সগলে (ক্রেতারা) খালি ঘুরিফিরি দ্যাকে, দাম শুনে, কিন্তু কিনে না। যে দাম কয়, তাতে বেচলে ম্যালা ট্যাকা নোচ (ক্ষতি) হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বেলা তিনটার সময় হাটোত চারটা গরু নিয়্যা আচচি। এ্যাখোনও (সন্ধ্যা ৭টা) একটাও বেচপার পাই নাই। বাড়িত ফিরি নিয়্যা যামো এখন।” একই হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছেন সদর উপজেলার তালুক মন্দুয়ার গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ।

তিনি বলেন, “তেল-সার-ওষুধের (কীটনাশক) দাম বাড়ি গেছে। এখন আর খালি চাষাবাস করি পোষায় না। তাই দুই বছর থিকি বাড়িত গরু পালিপুষি (মোটাতাজা করে) ইদের আগোত বেচি।”

তিনি আরও বলেন, “গরু বেচি যে লাভ হয়, তা দিয়ে দায়-দেনা শোধ করমু। কিন্তু হাটোত কেনার লোক কম। ইদের আগোত গরু বেচপার না পাইলে, ম্যালা ক্ষতি হবে।”

ওই হাটে গরু কিনতে আসা সাদুল্লাপুর উপজেলার জয়েনপুর গ্রামের সামিয়ুর রহমান বলেন, “গরুর দাম বেশ চড়া। বিক্রেতারা কেউ গরুর দাম ছাড়ছেন না। তাই গরু না কিনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। ঈদের আগে আগে হয়তো এই অবস্থা থাকবে না “

হাট ইজারাদার মো. জামাল মিয়া জানান, ঈদের এখনও কয়েকদিন সময় আছে। ঈদ ঘনিয়ে এলে বেচাকেনা বাড়বে।

এদিকে, গাইবান্ধায় চাহিদার তুলনায় বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫টি পশু। তার বিপরীতে জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৭৭টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে শেষ মুহূর্তে ১৭ হাজার ৩৬৮ খামারে ৩৮ হাজার ৫৩২টি ষাঁড়, ৩ হাজার ২৯৫টি বলদ, ২৪ হাজার ৪১টি গাভি, ১৭৩টি মহিষ, ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৩টি ছাগল ও ১০ হাজার ৫৭৬টি ভেড়ার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।

এছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়েও কৃষকরা বাড়ি বাড়ি কোরবানির পশু প্রতিপালন করেছেন। শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দপ্তরের নির্দেশিত উপায়ে মোটাতাজাকরণ করায় কোরবানির পশুর মাংস নিরাপদ। জেলায় এ বছর চাহিদা পূরণ করে ৬৯ হাজার ৯৭২টি কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

তিনি বলেন, “এত আগে গরু কিনে বাড়িতে লালন পালন করা বেশ কষ্ট ও ঝামেলা পোহাতে হয়। একারণে হাটে বেচা কেনা এখনও তেমন জমে উঠেনি। আগামী সোম-মঙ্গলবার থেকে হাটগুলোতে বেচা কেনা বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে জেলার হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল দল প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া খামারি ও কৃষকদেরকে সহায়তা করতে অনলাইনের মাধ্যমে পশু কেনা-বেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ