চাহিদার তথ্য যাচাইয়ের কারণে এবার কমে গেছে অপ্রয়োজনীয় ৪ কোটি বই ছাপার কাজ। এর ফলে সরকারের সাশ্রয় হচ্ছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। বেশি বই ছাপানোর চাহিদা দিয়ে বেশি মুনাফা হাতানোয় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চেয়েছেন শিক্ষা গবেষকরা।
বিগত বছরগুলোতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি বইয়ের চাহিদা দিতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। অসাধু শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশেই এই বাড়তি চাহিদা।
বিগত বছরগুলোতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি বইয়ের চাহিদা দিতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। অসাধু শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশেই এই বাড়তি চাহিদা।
বইয়ের বাড়তি চাহিদার বিষয়ে এবার কঠোর অবস্থানে এনসিটিবি। ৩২টি ভ্রাম্যমাণ দল গঠন করে সরেজমিন তথ্য যাচাই হয়েছে। তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতা ও সরবরাহ করা বইয়ের হিসাব মিলিয়ে বই ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপ্রয়োজনীয় চাহিদা বাদ দেওয়ায় কমে গেছে প্রায় ৪ কোটি বই ছাপানোর কাজ।
এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরী বলেন, ‘নিজস্ব অ্যাপস ব্যবহার করে আমরা কালেক্ট করেছি ডেটাগুলো। আমরা বোর্ডের কাছ থেকে ডেটাগুলো নিয়ে এসেছিলাম। ক্রশ চেকিং করে ওখানে কিছু কমিয়েছি। আমরা নির্দেশনা দিয়েছিলাম ফিল্ড পর্যায়ে কড়াকড়ি ভাবে যে কোনো ভাবেই যেন এবার বেশি না আসে বই।’
এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জন্য ৪০ কোটি ১২ লাখ বই ছাপানো হয়। এর মধ্যে গত বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাদ দেয়ায় ১০ম শ্রেণির জন্য ছাপাতে হয়েছে ৫ কোটি বই। যা এবছর আর ছাপাতে হবে না।
অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরী বলেন, ‘জুনের মধ্যে আমাদের সব প্যাকেজ আপলোড হয়ে যাবে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা বইগুলি আমাদের নির্দিষ্ট যে পয়েন্টগুলো আছে সেখানে পৌঁছানোর লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’
শিক্ষা গবেষকরা বলছেন, বিগত বছরে অতিরিক্ত চাহিদা দেওয়ার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা তাদের কারণে কোটি কোটি টাকার অপচয় হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘সাধারণত এরকম বেশি চাহিদা দিয়ে প্রেস মালিক, মাঠ কর্মকর্তা এবং অন্যান্যরা মিলে, এই নম্বরটা কিন্তু প্রকৃত নম্বর নয়। এই যে বাড়তি টাকাটা থাকে, এটা ভাগ বাটোয়ারা হয়ে যায়। এনসিটিবি এটা খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’
আগামী বছরের বই ছাপানোর দরপত্র প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।