অর্থপাচার বা মানি লন্ডারিং ও অর্থায়ন প্রতিরোধ ব্যবস্থায় বাংলাদেশের ১৩ ধাপ উন্নতি হয়েছে। ব্যাসেল অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ইনডেক্স- ২০২৪ রিপোর্টে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে ব্যাসেল অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ইনডেক্স- ২০২৩ রিপোর্টে পাঁচ ধাপ এগিয়েছিল দেশ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ১৩টি দেশকে পেছনে ফেলে র্যাংকিং এর ৪৬ নম্বর দেশ থেকে ৫৯ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ পাঁচটি দেশকে পেছনে ফেলে র্যাংকিং এর ৪১ নম্বর থেকে ৪৬ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছিল।
বিএফআইইউ প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম বলেন, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে বিএফআইইউ তদন্তকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। অগ্রাধিকার বিবেচনায় বিএফআইইউ কর্তৃক সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে ।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক এর StAR, USDoJ, IACCC, ICAR সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি আইনি সংস্থা নিয়োগের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যাগ গ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে, বিদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার একটি অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তারপরও আশা করা যায়, বিএফআইইউ এর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদারের ফলে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ১৩ ধাপ এগিয়েছে দেশ।
বিএফআইইউ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩- ২৪ অর্থবছরে রিপার্ট প্রদানকারী সংস্থাসমূহ বিএফআইইউতে সর্বমােট ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রম প্রতিবেদন (এসটিআর/এসএআর) দাখিল করেছে। এটি পূর্ববর্তী ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩ হাজার ২৩৯টি বা ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। এটি মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে রিপাের্ট প্রদানকারী সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাদের সচেতনতা এবং বিএফআইইউ এর সক্রিয় ভূমিকা ও কর্মতৎপরতার প্রতিফলন।
২০২২-২৩ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১৪ হাজার ১০৬টি। সে সময় আগের বছর থেকে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছিল ৬৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৫ হাজার ৫৩৫টি। ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৮ হাজার ৫৭১টি এবং ২০২০-২১ ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭৫টি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয়েছিল ৩ হাজার ৫৭৩টি।