ঠাকুরগাঁওয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় সরকারি কাজে বাঁধা ও সরকারি কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) রাত সাড়ে ১১টায় মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রনজু মিয়া। তিনি বলেন, পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এজাহারে সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ২০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে, বুধবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় সহকারী উপপরির্দশক (এএসআই) রনজু মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন—জেলা সদরের রহিমানপুর ইউনিয়নের আরাজী পাইক পাড়া এলাকার সাদেকুলের ছেলে মো. সজল (২৫), হোসেন আলীর ছেলে হুমায়ুন (২২), সুগার মিলের কর্মচারী মো. রমজান (৫৫), মো. বাদশা মিয়া (৩৫), সামছুল হকের ছেলে শাহাজাহান ওরফে শাহাজাহান মঙ্গলু (৪১), কালীতলা এলাকার আকতার (৪৮) ও মৃত মংলুর ছেলে মো. আমিরুল ইসলাম (৫৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে জেলা সদরের রহিমানপুর ইউনিয়নের আরাজি পাইকপাড়া গ্রামের সামছুল হকের ছেলে শাহাজাহান মঙ্গলুকে আটক করতে যান এএসআই মো. রনজু মিয়া ও মো. মাইদুল ইসলাম, ইউনুছসহ আরও কয়েকজনের একটি দল। এ সময় আসামিরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ চিৎকার-চেচামেচি করে পরোয়ানাভুক্ত আসামি শাহাজাহান মংলুকে গ্রেপ্তারের বাধা সৃষ্টি করে এবং পুলিশের কাজে বাধা প্রদানসহ পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এক পর্যায়ে আসামি মো. সজল উত্তেজিত হয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে এএসআই মাইদুল ইসলাম ও বাদী রনজু মিয়াকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে।
এ ছাড়া আসামি মো. বাদশা মিয়া ও শাহাজাহানসহ ৫০/২০ জনের একটি দল কনস্টেবল ইউনুস আলীকে এলোপাতাথাড়ি কিলঘুষি মেরে জখম করে পুলিশের হেফাজতে থাকা আসামি শাহাজাহানকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে থানায় বিষয়টি জানানো হলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করান।
এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা একই উদ্দেশে বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাধাদানসহ অভিযানে যাওয়া দলের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে আক্রমণ ও পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ায় তারা ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের ১৪৩/১৮৬/৩৪১/৩৩২/৩৩৩/২২৪/২২৫/৩৫৩/১১৪/৩৪ ধারার অপরাধ করেছে। তাই চিকিৎসা শেষে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন এএসআই রনজু মিয়া।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরোয়ারে আলম খান বলেন, পুলিশ হেফাজতে থাকা এক আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা এবং পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।