শিরোনাম
দেবীগঞ্জে ট্রাক চাপায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ দুই জনের মৃত্যু গাইবান্ধায় ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক রংপুরে পরীক্ষায় নকল: ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর রংপুর সিটি করপোরেশনে মশকনিধনে দেড় কোটি টাকা, তারপরও বাড়ছে উপদ্রব এবার ভারতের ১৫ শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে চীন’ চার নেতা ও গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থার প্রেক্ষিতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেবীগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে দোকানে হামলা, ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতাসহ আহত ৩ লাইভে গুলি করতে প্ররোচনার ঘটনায় বেরোবির প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০১:৫২ পূর্বাহ্ন

রংপুরে আলুর দামে ধস লোকসান গুনছে কৃষক

মেরিনা লাভলী, রংপুর / ১২৩ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

রংপুরে আলুর দামে ধস নেমেছে। উৎপাদন খরচের চেয়ে ৩ থেকে ৪ টাকা লসে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষককে। ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ বাড়িতে আধুনিক পদ্ধতিতে ঘর তৈরি করে আলু সংরক্ষণের পরামর্শ দিচ্ছে।

জানা গেছে, গত মৌসুমে রংপুরে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছিল। সে বছর কৃষকের আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা ব্যয় হলেও ক্ষেত থেকে আলু বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। প্রায় তিনগুণ লাভ হওয়ায় চলতি মৌসুমে আলুর আবাদ বেড়েছে। কিন্তু এ বছর সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিক খরচসহ সবকিছুর দাম ছিলি ঊর্ধ্বমুখী। আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর আলু উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে উত্তোলন মৌসুমে দাম হারিয়েছে আলু।

রংপুর সদর, পীরগাছা, তারাগঞ্জ এলাকার কৃষকরা জানায়, এ বছর এক দোন (২৪ শতক) জমিতে কৃষকের প্রায় ৪১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি দোনে গড়ে আলু উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার কেজি। বর্তমানে আলু বাজারে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হিসেব করলে দেখা যায় প্রতি দোনে কৃষকের প্রায় ৮ হাজার টাকা লোকসান। কেজি হিসেবে এ লেকসান দাঁড়ায় ৩ টাকা।

সরেজমিন দেখা গেছে, রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জে আলু উত্তোলণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক বেলাল হোসেন। তার আবাদ করা কার্ডিনাল জাতের আলুর ভালো ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হলেও হাসি নেই বেলাল হোসেনের মুখে। তিনি বলেন, এ বছর আলু উৎপাদনে আবহাওয়া ভালো ছিল। তুলনামূলক কম কীটনাশক লেগেছে। তবে এ বছর বাজারে আলুর দাম নেই। প্রতি কেজিতে আমাদের ৩ থেকে ৪ টাকা করে লস হয়েছে।

তারাগঞ্জের ইকরচালীর আলু চাষি শিপুল ইসলাম বলেন, বাজারে আলুর দাম কম হওয়ায় একটু দেরিতে আলু তুলছি। তবে বর্তমানেও যে দাম রয়েছে তাতেও আমাদের অনেক লোকসান হবে। তাই বোরো আবাদের জন্য আলু তুলে ফেলছি। সরকার বাজারে আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করলে আমরা বাঁচতে পারতাম।

পীরগাছা মেকুরার কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগ বাড়িতে আলু সংরক্ষণ করার জন্য বলছে। কিন্তু সেটি তো সমাধান না। কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য না পেলে তো আবাদ করতে আগ্রহী হবে না। সরকারের উচিত প্রয়োজনে সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে আলু ক্রয় করে কৃষকদের ক্ষতি পোষানো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছর রংপুর অঞ্চলে আলু চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত থাকে। এ বছর রংপুরে উত্তম কৃষি চর্চা-গ্যাপ অনুসরণ করে এক একর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গ্যাপ অনুসরণ করে আমরা আলু চাষ বৃদ্ধি করতে পারলে তা বিদেশে রপ্তানি করতে পারব।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রংপুর জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাকিল আকতার বলেন, উৎপাদন মৌসুমে আলুর জোগান বেশি হয়। তাই দাম কমে যায়। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণে আমরা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে বাড়িতে আলু সংরক্ষণের ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। এখানে কৃষকরা কয়েক মাস আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। প্রত্যেক কৃষক যদি নিজ বাড়িতে আলু সংরক্ষণ করতে পারলে পরে তা বিক্রি করে ভালো দাম পাবে।

তিনি বলেন, আমরা রংপুরের আলু চাষিদের একটি তালিকা প্রস্তুত করে তা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষ আলু চাষিদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে বাজার সংযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছে। আশা করছি কৃষকরা আলুর ন্যায্যমূল্য পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ