নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চলমান শ্রমিক আন্দোলন রূপ নিয়েছে সহিংসতায়। ২৩ দফা দাবিতে গত শনিবার থেকে এভারগ্রীন কোম্পানির শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের মধ্যেও।
গতকাল (মঙ্গলবার) আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনী পদক্ষেপ নিলে সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। বিকেলের দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের যৌথ উদ্যোগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেপজার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘গতকালকেই জানানো হয়েছিল আজ কোম্পানি খোলা থাকবে না। বিকেলে মিটিং শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামীকাল থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো চালু থাকবে কি না।’
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ইপিজেডের সব কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেপজার নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘গতকালকেই জানানো হয়েছিল আজ কোম্পানি খোলা থাকবে না। বিকেলে মিটিং শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামীকাল থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো চালু থাকবে কি না।’
স্থানীয় বাসিন্দা আজিমুল ইসলাম বলেন, ‘গতকালের ঘটনার পর এখানকার পরিস্থিতি উত্তেজিত ছিল। তবে সেনাবাহিনী-পুলিশ সকলে মিলে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আজকে সব কোম্পানি বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যাগুলোর সমাধান করে ইপিজেড চালু করে দেওয়া হোক।’
আরেক বাসিন্দা মারজান ইসলাম জানান, ‘আমরা বেশ কয়েকদিন ধরেই দেখছি কিছু শ্রমিক আন্দোলন করছে। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে কি হয়ে গেল, এত ঝামেলা আমরা বুঝতেই পারলাম না। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে, সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে সব কিছু। আমরা শুনছি ইপিজেড বন্ধের একটা পায়তারা চলছে। যদি এরকম কিছু থাকে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় জীবন দিতেও রাজি।’
ইপিজেড মোড়ে দোকান করেন রইছুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোম্পানিগুলো বন্ধ থাকায় বেচা-বিক্রি একদম নেই বললেই চলে। কারণ এখানে যারাই আসে, ইপিজেডের উদ্দেশ্যে আসে। বিক্রি না থাকায় লোনের কিস্তি আর পরিবারের ব্যয় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
এদিকে শ্রমিক হত্যার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানায়, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের ওপর কোন রকম মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া যাবে না। গুলির নির্দেশদাতাকে শনাক্ত করে তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া প্রাণনাশ ঘটে এমন কোন মারণাস্ত্র নীলফামারী জেলার কোথাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করতে পারবে না বলে দাবি জানায় দলটি। মোট সাতটি দাবি উপস্থাপন করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন সহ জেলার নেতৃবৃন্দ।