বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

মিডিয়া জগতে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়েছিলেন আফ্রিদি, প্রশ্রয়দাতা ছিলেন কামাল ও হারুন

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৭১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

  • ‘গিভ অ্যান্ড টেক সিন্ডিকেট’ মিলে গড়ে ওঠে মাফিয়া সাম্রাজ্য
  • মুনিয়া হত্যায় আফ্রিদি ‘জড়িত’
  • চক্রান্ত করে দ্রুততম সময়ে করা হয় মুনিয়া হত্যা মামলা
  • অন্যায্যভাবে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে

নিজের ‘গুডবয়’ মার্কা চেহারার আড়লে সত্যিকারের ‘ব্যাডবয়’ তৌহিদ আফ্রিদি এই জাদুর শহর ঢাকার রোমিও। অসংখ্য জুলিয়েটকে রাতের রঙিন আলোয় নাচিয়ে নিজে রোমাঞ্চে বুঁদ হয়ে দিনের বেলায় নিষ্পাপ কনটেন্ট ক্রিয়েটর। বাবা টিভি চ্যানেলের দখলদার মালিক। তাঁকে ক্ষমতার ‘পাওয়ার হাউস’ বানিয়ে সব অপকর্মের ‘ফুয়েল’ নিয়েছেন হাসিনার মন্ত্রী আনিসুল-কামালের কাছ থেকে।

মিথ্যা প্রেম-প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, দখল, মদ-মাস্তি-নির্যাতনের মতো যত অপরাধ আছে, এসবের লাইসেন্স দিয়ে পাশে থেকেছেন ডিবি হারুন। বিনিময়ে ‘ট্র্যাপে’ ফালানো অসংখ্য সুন্দরী তরুণীকে দিয়ে তাঁদের মনোরঞ্জন। মাফিয়া হয়ে অহরহ এসব অপকর্মই ঘটিয়েছেন ধরা পড়া কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি। আলোচিত মুনিয়া হত্যায় অভিযোগের তীর এখন তাঁকে ঘিরে।

যে মামলায় মিথ্যা অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকেও জড়ানো হয়েছিল। জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর মুখোশের আড়ালে তাঁর অপরাধ জগতের আসল রহস্য উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা এখন তাঁর অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। সিআইডি বিষয়টির তদন্ত করছে।

জানা যায়, বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ছেলে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি ছিলেন সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্রের মধ্যমণি। অবৈধ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি অন্তত অর্ধশতাধিক তরুণীকে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজে বাধ্য করান বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর অন্ধকার জগতের নেপথ্যের শক্তি ছিলেন অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক অনেক আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা।

এভাবে তাঁর নারী কেলেঙ্কারিসহ প্রভাবশালীদের সঙ্গে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ভাষ্য, সাবেক সরকারের আমলে নারী সাপ্লাইয়ার, চাকরি বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, অর্থ ও সম্পদ দখলসহ সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেই তৌহিদ আফ্রিদির সম্পৃক্ততা ছিল।

এরই মধ্যে তাঁর কাছে থেকে মোবাইল, হার্ডডিস্ক ও ম্যাকবুক (তিনটি ডিভাইস) জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত তিনটি ডিভাইস ফরেনসিক পরীক্ষার প্রক্রিয়া চলছে। এতে তাঁর অপরাধ জগতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে গতকাল মিডিয়াকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি ছিলেন সব অপকর্মের একজন ধুরন্ধর প্রতারক জানিয়ে সিআইডি বলেছে, অপরাধ জগতে অন্যতম শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে তৌহিদ আফ্রিদির। ভুক্তভোগীরা সেই সিন্ডিকেটের নাম দিয়েছে ‘গিভ অ্যান্ড টেক সিন্ডিকেট’। যাঁরাই সেই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস দেখাতেন তাঁদের দেওয়া হতো প্রাণনাশের হুমকি, করা হতো গুম, ঠুকে দেওয়া হতো তাঁদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা।

২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে আলোচিত মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ঘটনার মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরসহ আটজনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করা হয়। আর এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে যে মুনিয়ার হত্যার নেপথ্যে হাত থাকতে পারে আফ্রিদির। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা এ ধরনের তথ্য পেয়ে যাচাই করছেন।

মুনিয়া হত্যা মামলার তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানায়, হত্যাকাণ্ডে আগের অভিযুক্তদের সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, তদন্তে হত্যা বা ধর্ষণের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে না পাওয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এর আগে মুনিয়ার বোন নুসরাতের করা ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’র প্রথম মামলায়ও পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন এবং আদালত থেকে খালাস পান বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার বলেন, সায়েম সোবহান আনভীর একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী এবং দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। দেশে-বিদেশে তাঁর রয়েছে ব্যাপক খ্যাতি ও সুনাম। তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করা এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসার ক্ষতি করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে দুটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র মিথ্যা মামলা সাজানো হয়, যা দীর্ঘদিন তদন্তের পর পর্যায়ক্রমে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রে বাদী নুসরাত জাহান তানিয়ার সঙ্গে তৎকালীন বিভিন্ন যড়যন্ত্রকারী মহল যোগ দেয়। তারা ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপবাদ ও ভুল তথ্য ছড়ায়। বাদী নুসরাতও সরাসরি এসব টক শো ও অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নেন এবং বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ান। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন, আদালতের খালাসের আদেশ ও পিবিআইয়ের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে এসব ষড়যন্ত্র মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

নারী কেলেঙ্কারির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড তৌহিদ আফ্রিদির ভাইরাল অডিওতে মুনিয়া হত্যায় জড়িত থাকাসহ নানা নিষ্ঠুরতার প্রমাণ মেলার বিষয়ে সিআইডি জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে এক নারীকে দেওয়া হত্যার হুমকিই ইঙ্গিত করে মুনিয়া হত্যায় আফ্রিদির সংশ্লিষ্টতা। এখন মনে হচ্ছে, আফ্রিদিই মুনিয়া হত্যার নেপথ্যের কারিগর।

সূত্র জানায়, আরেকটি অডিও রেকর্ডে মুনিয়ার সঙ্গে তাঁর গোপন সম্পর্কের কথা প্রকাশ পায়। আর লাশ উদ্ধারের পর আফ্রিদিকে আড়ালে রেখে ঘটনা অন্য খাতে প্রভাবিত করে অর্থ উপার্জনের জন্য সব কিছুই করেছেন ডিবি হারুন ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। তাঁদের সঙ্গে একই সুরে সুর মিলিয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও। ফলে দেশের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে মুনিয়া হত্যা মামলা দায়ের ও পরবর্তী ১৪ ঘণ্টায় এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশ আসে।

সিআইডির তদন্তে ভুক্তভোগী নারী ও উঠতি তরুণীদের কাছে ‘ব্যাডবয়’ হিসেবে পরিচিত আফ্রিদি গ্রেপ্তারের পর এ ধরনের আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে জানিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তৌহিদ আফ্রিদির সঙ্গে অন্তত অর্ধশতাধিক অবৈধ সম্পর্ক গড়া নারীরা এখন সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ভুক্তিভোগী নারী সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন জানিয়ে সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও নারীদের সঙ্গে আফ্রিদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

ওই সব নারীর মাধ্যমে তিনি নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। বিনিময়ে টাকা ও ক্ষমতা ভোগ করতেন তিনি। এই করে অনেক অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন তিনি।

সিআইডির তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে নারী-তরুণীদের ট্র্যাপে ফেলা, ব্ল্যাকমেইল, অবাধে মেলামেশা ও নারী কেলেঙ্কারি। এ ছাড়া ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, জিম্মি করে অর্থ আদায়, মারধর, বাড়ি-জমি দখল, প্লট দখল, ফ্ল্যাট দখল, গুম, খুন, হত্যা, অর্থপাচার, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, আটকে রেখে নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন আফ্রিদি।

সিআইডি সূত্র বলছে, আফ্রিদিকে রিমান্ডে নিয়ে এরই মধ্যে তিন দিন ধরে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কখনো তথ্য দিচ্ছেন, আবার কখনো অসুস্থতার কথা বলে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর কাছে এরই মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর কী ধরনের সম্পর্ক ছিল। সেসব প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তাঁর সব কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করতেন তাঁরা।

গিভ অ্যান্ড টেক সিন্ডিকেটের যত সব অপকর্ম : কামাল, হারুন ও আফ্রিদি সিন্ডিকেট একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করে আসছে দীর্ঘ বছর। আফ্রিদি তাঁর বাপের দখল করা ‘পাওয়ার হাউস খ্যাত’ মাই টিভির পরিচয়ে আর হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডিবি হারুন ও আইনমন্ত্রীর সান্নিধ্য নিতেন সব সময়। এর মধ্যে আফ্রিদির অন্যতম টার্গেট ছিল সুন্দরী নারী-তরুণী সাপ্লাই করা, তাঁদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, মদ্যপান, আর তাঁদের সঙ্গে মতবিরোধ হলে হুমকি দিতেন এবং নির্যাতন চালাতেন।

এছাড়া মাদক ব্যবসায় আফ্রিদির হাত ছিল পাকা, কোনো রকম ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই হারুন-কামালের শেল্টারে চালাতেন কারবার। এ ছাড়া তাঁর বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর অবৈধ সব দখলদারির আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন হারুন ও কামাল। সে জন্য ডিবি অফিসে আফ্রিদির কথামতো যাঁকে-তাঁকে তলব করতেন হারুন। সেখানে নিয়ে চালানো হতো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনও, যা আফ্রিদি গ্রেপ্তারের পরপরই একাধিক কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ভুক্তভোগী তরুণী ও মানুষের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে কামাল ও হারুনের যত নারীসঙ্গ ও মাই টিভির সাপোর্ট প্রয়োজন হতো, তার সবই দিতেন ‘ব্যাডবয়’ আফ্রিদি।

আফ্রিদির খপ্পরে যেসব তরুণী, নারী কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটর পড়েছেন তাঁদের জীবন নাস্তানাবুদ করে ফেলেছেন তিনি। বিয়ের আশ্বাস ও মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে অসংখ্য তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। ওই সময় তাঁর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। কারণ, তাঁর হাতে ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় নিয়ন্ত্রণ। ফলে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম ছিল আফ্রিদি।

তাঁর গ্রেপ্তারের পর কনটেন্ট ক্রিয়েটর সায়েম, একাধিক ভুক্তভোগী নারী ও তরুণী, কনটেন্ট ক্রিয়েটর আফ্রিদির বন্ধু তানভীর রাহী, প্রত্যয় হিরন, স্বপন আহমেদসহ অনেকের কথায় এসব আধিপত্য ও নির্যাতনে কথা উঠে আসে। এদিকে হারুনের অন্যতম নেশা ছিল সুন্দরী রমণী ও সিনেমা নাটকপাড়ার মডেলদের সান্নিধ্য, যা তিনি দায়িত্ব পালনকালে কারণে-অকারণে এসব মডেলকে তাঁর অফিসে ডাকতেন—এটা ছিল তাঁর অন্যতম এক নমুনা।

আর এর বড় একটি অংশ সাপ্লাই দিতেন তৌহিদ আফ্রিদি। তা ছাড়া হারুন কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে দখলের জমিতে করা প্রেসিডেন্ট রিসোর্টে নিয়মিত ঢাকা থেকে চলচ্চিত্রশিল্পীদের নিয়ে যেতেন, কারণ ছিল তাঁদের সান্নিধ্যে আসা। ছাত্র আন্দোলন চলার সময় তাঁর নগ্ন ভিডিওটিও সিনেমাপাড়ার কোনো শিল্পীর সঙ্গেই বলে ধারণা করছেন সমালোচনাকারীরা। এ ছাড়া কোন নায়িকা কোন সিনেমা বা বিজ্ঞাপন করবেন বা করবেন না, তা-ও ডিবি অফিস থেকে হারুন ঠিক করে দিতেন।

তাঁর মতের অমত হলে মিথ্যা মামলা ও সাইবার আক্রমণের শিকার হতে হতো, যা কয়েক দিন আগেই একজন মডেলের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে।

আফ্রিদি ও কামাল সিন্ডিকেট ছিল বেপরোয়া : আফ্রিদির বিপুল অবৈধ অর্থের তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সেই সঙ্গে আফ্রিদির সঙ্গে প্রভাবশালী চক্রের আরো যাঁদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল সেসব নিয়েও তদন্ত চলছে জানিয়ে সিআইডির কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে।

আফ্রিদি চক্রের অন্যতমদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই দুদক প্রভাবশালী মন্ত্রী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামে ও তাঁর পরিবারের নামে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে। পাশাপাশি সংস্থাটির অনুসন্ধানে আরো ২০০ কোটি টাকার বেশি মানি লন্ডারিংসংক্রান্ত অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার কথা গত বছরই জানিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ঘুষ হিসেবে বস্তা বস্তা টাকা নিতেন।

পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এই টাকা আদায় করা হতো। ঘুষ আদায়ে তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন আসাদুজ্জামান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ