নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকার ৬৫ টি ওয়াসব্লক নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহারের অভিযোগ উঠেছে। ফলে একটি নির্মানাধীন ওয়াসব্লক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। কাজের মান নিম্নমানের হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে ঠিকাদারের প্রায়ই ঝগড়া বেঁধে যাচ্ছে। এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চাপে অনেক স্কুলের নিমমানের নির্মান সামগ্রী ফেরৎ নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ঠিকাদাররা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর সুত্রে জানা গেছে,২০২৪/২৫ অর্থবছরে উপজেলার ৬৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জিপিএস ১ প্রকল্পের আওতায় একতলা ও দ্বিতল বিশিষ্ট ওয়াসব্লক নিম্নর্মানের জন্য ১৩ টি প্যাকেজে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা ব্যায় ধরে দরপত্র আহবান করা হয়। কাজে মানসম্পন্ন,ইট, খোয়া,বালুসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যাবহারের নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদাররা স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যাবহার করছে। উত্তর দুরাকুটি ২ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াসব্লক নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহার করায় জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের নির্দেশে নিমার্নাধীন একটি ওয়াসব্লক ভেঙ্গে ফেলা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর দুরাকুটি ২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর দুরাকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ময়দানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন রাজীব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মুশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিকাপুর ইউছুফ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে , নিম্নমানের কাজের বিষয়ে এলাকাবাসী ও প্রধান শিক্ষকদের জোরালো অভিযোগ পাওয়া যায়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ছুটির পর বিদ্যালয়ে কেউ উপস্থিত না থাকার সুযোগে ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের লোকজন নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানালেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। প্রধান শিক্ষক ও এলকাবাসী নিম্নমানের কাজে বাধা দিলে তড়িঘড়ি করে বিদ্যালয়ে এসে গাঁথনিকৃত ওয়াল ভেঙ্গে পুনরায় কাজ করেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে ঠিকাদার রিপন মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ভাই কাজ শেষ করতে বেশিদিন লাগবেনা। তাছাড়া শেড নির্মান করা অনেক ঝামেলা তাই শ্রেনীকক্ষে মালামাল রেখেছি। যাহোক আমি দ্রুত শ্রেনীকক্ষ থেকে মালামাল সরায় নেব।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামমুদা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লকের নির্মান কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বেশকিছু বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লকের ওয়াল নির্মানে নিম্নমানের ইটের ব্যাবহার দেখে সেগুলো ফেরৎ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছি। যে সকল প্রতিষ্ঠানে বেজ ও ছাদ ঢালাইয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহারের করা হয়েছে । সেগুলো ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামের সাথে ওয়াশব্লক নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে কথা বললে তিনি অকপটে স্বীকার করে বলেন, ভাই উত্তর দুরাকুটি ২ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের ইট দিয়ে ওয়াল গাঁথার কারনে সেটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া যে সকল বিদ্যালয়ে নিম্নমানের উপকরন পেয়েছি তাৎক্ষনিক সেগুলো সরাতে বলেছি।