শিরোনাম
বুয়েট শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করার সাহস প্রশাসন কোথায় পায়, প্রশ্ন সারজিসের ভারতের ছাড়া পানিতে বন্যা, বিস্ফোরণে বাঁধ উড়িয়ে দিলো পাকিস্তান গাইবান্ধায় দুই ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, খাটের নিচ ও ওয়্যারড্রব থেকে দুই বন্ধু ধরা এনসিপির ৪ প্রতিনিধির ছাত্রদলে যোগদান, ফুল দিয়ে বরণ মনিটরে ছেলেকে গুলির ভিডিও দেখে কাঁদলেন আবু সাঈদের বাবা কুত্তার মতো পেটায়, এজন্য কি যুদ্ধ করেছিলাম’- আদালতে রিয়াদ পীরগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়াড়ি আটক সরকারের ‘অকাল মৃত্যু’ হয়েছে দাবি করে গায়েবানা জানাজা পড়লেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা বাবার ‘আদেশে’ এক ভাইয়ের চোখ তুলে নিলেন অপর দুই ভাই মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের সত্য কথাগুলো বলতে শুরু করলাম: ফজলুর রহমান
বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

মোলং নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়ম: ফাঁকা ক্লাসরুমে অনুপস্থিত শিক্ষার্থী

মো: মাইনুল ইসলাম, মিঠাপুকুর প্রতিনিধি / ২৪১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের মোলং নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন ৫ জন শিক্ষক। মনিটরিং বোর্ড অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৪ জন হলেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরীক্ষার সময়েও ক্লাসে উপস্থিত মাত্র ১৩ জন শিক্ষার্থী।

আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১২:৫০ মিনিটে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়—বেশিরভাগ ক্লাসরুম ফাঁকা, আর হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে । শিক্ষক থাকলেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যত নেই ও পরীক্ষার রুমে ডিউটি নেই বললেই চলে।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আ ন ম আশরাফুল আলম দায়িত্বহীনতা ও একনায়কতান্ত্রিক আচরণে বিদ্যালয়কে নষ্ট করে দিচ্ছেন। তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না, নানা অজুহাতে ছুটি নেন। তাঁর প্রভাবে অন্য শিক্ষকও নির্ধারিত সময়ের আগে চলে যান।

সাংবাদিকরা উপস্থিতি রেজিস্টার দেখতে চাইলে নির্দিষ্ট তথ্য দিতে ব্যর্থ হন প্রধান শিক্ষক। বরং দেখা যায়, অন্য এক শিক্ষক রান্নাঘর সদৃশ কক্ষে গোপনে হাজিরায় স্বাক্ষর করছেন।

প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন,শিক্ষার্থী না আসলে আমি কী করতে পারি? অভিভাবকদের কাছে যান, ওদের জিজ্ঞেস করুন কেন পাঠায় না। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তথ্য দিবো, সাংবাদিকদের নয়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি সম্পর্কেও প্রধান শিক্ষক সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হন। তিনি সাংবাদিকদের জানান,৪০ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে।

কিন্তু যাচাই করে দেখা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের পে-রোলে মাত্র ২৬ জন সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে। অর্থাৎ উপবৃত্তির সংখ্যায় বড় ধরনের গড়মিল আছে।

অনেক অভিভাবক বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে যত্ন ও শিক্ষার পরিবেশের অভাব থাকায় তাঁরা সন্তানদের কেজি স্কুলে ভর্তি করছেন।

এমন অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোজাহিদুল ইসলাম, রানীপুকুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো: শরীফ হাসান সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মো: রেজাউল করিম রেজা এবং সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মো: ফিরোজ খান। তাঁরা সরেজমিনে অনিয়ম প্রত্যক্ষ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মো: মোজাহিদুল ইসলাম বলেন,একজন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে বহাল থাকা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। তাঁর একনায়কতন্ত্র কায়েমের কারণে বিদ্যালয় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।

সাধারণ সম্পাদক মো: রেজাউল করিম রেজা বলেন,একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ হলো শিক্ষার্থী। অথচ এখানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। অবিলম্বে তদন্ত করে ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।

সচেতন মহল ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ মনে করেন, শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও যদি ক্লাসরুম ফাঁকা থাকে এবং বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে, তবে এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে প্রধান শিক্ষকের ওপরই বর্তায়। তাঁরা শিক্ষা অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ