গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতুতে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে সেতুর উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে সেতু পার হচ্ছিল দুই যুবক। এ সময় সেতুর ওপর হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী দুজন ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের সামনের অংশ ও অটোভ্যানটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা আহত দুইজনকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এর আগে, গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় সেতুর সংযোগ সড়কে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার দুই থানার মোড় এলাকায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় খোদেজা বেগম (৮০) নামের এক বৃদ্ধা নারী নিহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ হলেও সেখানে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ, নেই সিসি ক্যামেরা বা স্পিড ব্রেকার। ফলে গাড়িগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে, যা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। পাশাপাশি রাতে সেতু অন্ধকারে ডুবে থাকে, কারণ এর আগেই বৈদ্যুতিক তার ও রিফ্লেক্টর লাইট চুরি হয়েছে।
সেতুর এমন নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, প্রায় নয়শত পঁচিশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি মেগা প্রকল্পে কীভাবে ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়নি? সামাজিক মাধ্যমে অনেকে লিখেছেন, ‘প্রতিদিন কত প্রাণ ঝরবে, কত পরিবার কাঁদবে?’ কেউ কেউ এও বলেছেন, ‘এটি শুধুই সরকারি অর্থের অপচয় আর দায়িত্বহীনতার প্রতিচ্ছবি।’
স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেতুটিকে দ্রুত পূর্ণ নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে। চুরির ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে। পাশাপাশি সেতুতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ও রাতে নিয়মিত পুলিশ প্যাট্রোল চালুরও জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীকে সংযুক্ত করা এই মাওলানা ভাসানী সেতুটি উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। তবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও চুরির ঘটনায় এই সম্ভাবনা এখন হুমকির মুখে।