শিরোনাম
সাগর-রুনির ছেলে মেঘের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা জামায়াতের শর্ত ও দাবি নিশ্চিত না করলে নির্বাচন হবে না : আযাদ নির্বাচনে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা চেষ্টা চলছে: তারেক রহমান রাণীশংকৈলে ৩ হাজার ১২০পিচ ইয়বাসহ গ্রেফতার-৪ ঠাকুরগাঁওয়ে অটোরিকশা সহ নিখোঁজ হওয়া যুবকের লাশ আখ খেতে থেকে উদ্ধার পীরগঞ্জে সেনাবাহিনী-পুলিশের যৌথ অভিযানে রিয়েক্টিফাইভ সহ আটক- ২ অফিশিয়াল পাসপোর্টে ভিসা ছাড়াই পাকিস্তান সফর করা যাবে : প্রেসসচিব থানা ব্যারাকেই নারী পুলিশকে ৬ মাস ধরে ধর্ষণ পুরুষ পুলিশের, ভিডিও ধারণ মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ১% পাবে মিডলম্যান, ৫% পাবে মিনিস্ট্রি’—উপদেষ্টা আসিফের প্রেস সেক্রেটারির অডিও ফাঁস
বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২২ অপরাহ্ন

থানা ব্যারাকেই নারী পুলিশকে ৬ মাস ধরে ধর্ষণ পুরুষ পুলিশের, ভিডিও ধারণ

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৩৫৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার নারী ব্যারাকে এক নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই থানার কনস্টেবল সাফিউর রহমানের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছয় মাস ধরে ওই নারী সদস্যকে থানা ব্যারাকেই বারবার ধর্ষণ করেন। মামলা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন ভুক্তভোগী। অভিযোগ রয়েছে, থানার ওসিসহ জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তবে পুলিশ বলছে ব্যারাকে এমন কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নেই। কারণ একটা ব্যারাকের রুমে কেউ না কেউ থাকে সব সময়। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। এটা প্রেমঘটিত কিনা কাউকে ফাঁসানো হচ্ছে কিনা সব দেখা হচ্ছে। তাই এই মুহূর্তেই এ বিষয়ে সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ওই নারী কনস্টেবল আমাদের কাছে অভিযোগ করার পরপরই আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারী সদস্য জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি আশুলিয়া থানা থেকে বদলি হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। এরপর পরিচিত হওয়ার কথা বলে সাফিউর তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। গত রমজানের ঈদের পর এক রাতে ব্যারাকে একা থাকাকালে সাফিউর হঠাৎ রুমে ঢুকে তাকে জাপটে ধরেন এবং ধর্ষণ করেন। এসময় তিনি মুখ চেপে ধরে পুরো ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। কান্নায় ভেঙে পড়লে তিনি মাফ চেয়ে বলেন, ‘মাথা ঠিক ছিল না, যা হয়েছে ভুলে যাও। কাউকে বললে ভিডিও ছড়িয়ে দেবো, তুমিও বাঁচতে পারবে না।’

চাকরি হারানোর ভয়, সামাজিক লজ্জা ও নিরাপত্তাহীনতায় নিরব থাকলেও ওই ভিডিওর ভয় দেখিয়ে সাফিউর দিনের পর দিন থানা ব্যারাকেই তাকে ধর্ষণ করে যান বলে অভিযোগ করেন ওই নারী সদস্য। সর্বশেষ ১৫ আগস্ট রাত ২টা ৩০ মিনিটে আবারও তিনি ধর্ষণের শিকার হন। ওই রাতে ৩টা ৪৫ মিনিটে সাফিউর তার রুম থেকে বের হন। এসময় বিয়ের আশ্বাসও দিয়ে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি।

নারী সদস্য জানান, যখনই তিনি বিয়ের বিষয়ে চাপ দেন বা শারীরিক সম্পর্কের বিরোধিতা করেন, তখনই সাফিউর তাকে মারধর করেন। তার কাছে সেই নির্যাতনের একাধিক ছবিও রয়েছে। একপর্যায়ে তিনি ১৬ আগস্ট থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ইবনে ফরহাদকে বিষয়টি গোপনে জানান, কিন্তু তিনি বিষয়টি ওসি তদন্ত আল-আমিন হোসেনকে জানিয়ে দেন। ওসি তদন্ত ও অভিযুক্ত সাফিউরের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় শুরু থেকেই তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

তিনি আরও বলেন, ‘১৭ আগস্ট আমি থানায় গিয়ে ধর্ষণ মামলার লিখিত অভিযোগসহ আবেদন করতে চাইলে ওসি আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমরা চাকরি করি, কেউ অভিযোগ করলেই তো মামলা নিতে পারি না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বললে তারপর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’ আমি বলি, একজন সাধারণ মানুষকেও তো বসিয়ে রেখে মামলা নেওয়া হয়, আমি একজন পুলিশ সদস্য হয়েও বিচার পাবো না?

এরপর ওসি তাকে আলামত নষ্টের বিষয়ে জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে থানার মুন্সীর মাধ্যমে তাকে অর্থের প্রলোভন দেখান বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরদিনই তাকে জরুরি ভিত্তিতে সিসি করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে অভিযুক্ত সাফিউরকেও পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

পরিস্থিতির কোনো সমাধান না দেখে তিনি বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে জানান। এসপি অফিসে ডেকে পাঠিয়ে তাকে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়। সেখানে তিনি তার কাছে থাকা ছবি, ভিডিও ও অন্যান্য প্রমাণ তুলে ধরেন। এ সময় সাফিউরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরক্ষণেই আলফা-২ অফিসারের কক্ষে ঢুকে জানান, তিনি ওই নারীকে চেনেন না। অথচ তারা দুজন একই থানায় দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন বলেও জানান ওই নারী।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত কনস্টেবল সাফিউরের নম্বরে ফোন দিলে, একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেনকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

তবে ওসি তদন্ত আল-আমিন হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ওই নারী কনস্টেবল গত ১৮ আগস্ট আমাদের কাছে অভিযোগ করার পরই আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই। তখন প্রাথমিকভাবে তাদেরকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। আর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বলা বিস্তারিত বলা যাবে। মামলা নিতে অস্বীকারের বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে আমাদের কাছে মামলা করবে বলে কোন জানায়নি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ