১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ২৬ জনকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মী একসঙ্গে সমবেত হতে না পারে—সেজন্য ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে পুলিশ, র্যাব, আনসার মোতায়েন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ বলছে, সরকারের নির্দেশনা রয়েছে ১৫ আগস্ট উপলক্ষে নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ সমবেত হতে পারবে না। এরই মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গত কয়েকমাসে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেছে। কাজেই কোনোরকম ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যারা সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা হরণ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধানমন্ডি ৩২-এর প্রবেশ মুখেই ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। শেখ মুজিবের বাড়ির সামনে রাখা হয়েছে জলকামান। ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই যাতে সেখানে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এদিকে মূল ফটকের সামনেই সন্ধ্যা থেকে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। কিছুক্ষণ পরপর তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তারা প্রায় সারারাত এবং শুক্রবার সারাদিন থাকবেন বলে জানান।
এই দিনটি সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিলে পতন ঘটে আওয়ামী সরকারের। এরপর গত বছর ১৫ আগস্ট দলটির নেতাকর্মীরা মাঠে না নামলেও এবারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ১ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত গোপন স্থান থেকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য নানাভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট ঘিরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে জানান দিতে চায় যে, তারা আছেন এবং থাকবেন। মূলত এর পরিপ্রেক্ষিতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান বলেন, ‘পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। রাতেও থাকবে। পুরো ধানমন্ডি ৩২ নম্বর পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে কাউকে কোনও অনুষ্ঠান বা অনুষ্ঠানের নামে অরাজকতা করতে দেওয়া হবে না।’