সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বরগুনার পৌর শহরের গার্মেন্টস পট্টি এলাকার একটি কাপড়ের দোকানে ঢুকে মো. জসিম নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে দোকানপাট বন্ধ করে দেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হওয়া পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, জসিম তার শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে নিজের দোকান থেকে বের হয়ে খাবার কেনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। এসময় ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারী পথচারীর সঙ্গে ওই শিশুটির ধাক্কা লাগলে শিশুটি সিটকে পড়ে যায়। পরে বিষয়টি নিয়ে জসিম ও ওই নারীর মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বাজারের অন্য বস্ত্র ব্যবসায়ী ও সমিতির নেতৃবৃন্দের নজরে এলে তাৎক্ষণিক সমাধান করতে উভয় পক্ষকে ডাকেন তারা। এসময় ইয়াসমিন তানিয়ার ছেলে সমন্বয়ক দাবি করা সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
কিন্তু সমাধানের চেষ্টা চলাকালীন সিনহা রহমান উত্তেজিত হয়ে জসিমকে মারধর শুরু করেন। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হলে তৎক্ষণাৎ আশেপাশের সব দোকান বন্ধ করে দেন তারা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. জসিম অভিযোগ করে বলেন, সন্তানকে নিয়ে খাবার কিনতে বের হই। পথে ইয়াসমিন তানিয়া নামে এক নারীর সঙ্গে আমার সন্তানের ধাক্কা লাগে। এতে সে পড়ে যায়। কিন্তু উল্টো ওই নারী আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি শেষ হলেও কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা আমাকে মীমাংসার কথা বলে ডাকেন। সেখানে গেলে ওই নারীর ছেলে সিনহা রহমান কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। আমি এ ঘটনা বিচার চাই।
এ বিষয়ে পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ বলেন, ব্যবসায়ী জসিমের সঙ্গে এক নারী পথচারীর ধাক্কা লাগার ঘটনায় আমরা সমাধানের জন্য উভয় পক্ষ নিয়ে আমার দোকানে বসি। বক্তব্য শোনার একপর্যায়ে ওই নারীর ছেলে ও সঙ্গে আরেকজন দোকানে উঠে আমাদের সামনে জসিমকে মারধর শুরু করে। এসময় আমরা সবাই মিলে তাদের থামাতে ও দোকান লুটের হাত থেকে রেহাই পেয়েছি। ঘটনা শোনার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সবাই দোকানপাট বন্ধ করে দেয়। এছাড়া আমরা ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত সিনহা রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সিনহা রহমানের মা ইয়াসমিন তানিয়া বলেন, একটা ঘটনা নিয়ে সমাধানের জন্য বসা হয়েছিল। সেখানে আমার ছেলে ভুল করেছে। ব্যবসায়ীদের কাছে সবাই মিলে বসে সেটি সমাধানের আহ্বান জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াকুব হোসাইন বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।