শিরোনাম
মামলা দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী নেতার বিরুদ্ধে কারাগারে থাকা খালাতো ভাইকে গাঁজা দিতে গিয়ে আটক এক যুবক আজকে একটি পক্ষ আবু সাঈদের রক্তের সাথে গাদ্দারি করছে : সাদেক কায়েম কাউনিয়ায় পলাশ মেম্বারের কাছ থেকে টাকা ছাড়া মিলে না ভিজিএফ-ভিজিডি কার্ডসহ সরকারি সেবা পঞ্চগড়ে রাস্তার অনিয়ম অস্বীকার; এলজিইডি কর্মকর্তাকে গণপিটুনি রাণীশংকৈলে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২ চাঁদাবাজ গ্রেফতার  ফেসবুক লাইভে এসে ঘোষণা দিয়ে রাজনীতি ছাড়লেন বৈষম্যবিরোধী নেত্রী লিজা তারা অনেক বেশি ভোগ বিলাসে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন: সাদিক কায়েম যাদের অ্যানড্রয়েড ফোন কেনার সামর্থ্য ছিল না তাদের হাতে এখন আইফোন : উসমান হাদী কালীগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দোকান পুড়ে ছাই, বিপাকে ব্যবসায়ী পরিবার
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন

শুধু চাঁদাবাজি নয়; মাদকের ভয়াবহ সিণ্ডিকেটের সাথে জড়িত ছিলেন সাবেক সমন্বয়করা

ডেস্ক রিপোর্ট / ৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

চাঁদাবাজির দায়ে গুলশান থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সমন্বয়ক পরিচয়দানকারী রিয়াদসহ পাঁচজন শুধু চাঁদাবাজিই নয়, তারা মাদক সিন্ডিকেটেরও সদস্যও ছিলেন বটে। এ ধরনের শতাধিক তরুণ সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে সারা দেশে একটি শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। সারা দেশে মাদক বহন, নিরাপদে বিক্রি ও নতুন ভোক্তা তৈরি করতেন এরা। জুলাই আন্দোলন করতে গিয়ে যাদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, তাদের অনেকেই এখন তাদের মাদক জালে ফেঁসে গেছেন।

ঢাকাসহ সারা দেশে যেসব বার ও মাদকের আড্ডা আছে, ওই সব স্থান থেকে গত ১১ মাসে তারা নিয়মিত চাঁদা নিতেন। একই সঙ্গে ওই সব স্থানে তাদের মাদকপণ্য বিক্রি করতেও সংশ্লিষ্টদের বাধ্য করা হতো। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গুলশান-বনানীর একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অভিজাত এসব এলাকায় আগে যেসব মাদক বাণিজ্য ছিল, ৫ আগস্টের পর তা দখল করেন সমন্বয়ক নামধারীরা।

এ সুযোগে এলাকার প্রভাবশালী মাদক কারবারিরা এসব সমন্বয়ককে হাত করে। টাকা ও মাদক সেবনের সুযোগ দিয়ে প্রথমে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে এসব সমন্বয়ক পরিচয়ধারীকে ব্যবহার করে নিরাপদে মাদক আনা-নেওয়ার কাজ করে। তাদের মাধ্যমে সারা দেশে সমন্বয়ক পরিচয়ধারী শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়ে গড়ে তোলা হয় মাদক পরিবহনের নিরাপদ সিন্ডিকেট।

সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর নতুন সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার কারণে মাদক ভোক্তারসংখ্যাও বেড়ে গেছে। মদ ছাড়া অন্যান্য মাদক পরিবহন, হোম ডেলিভারি দেওয়া এখন অনেক নিরাপদ বলে মনে করছে একাধিক সূত্র। জানা গেছে, গত ১১ মাসে ভারত ও মিয়ানমার থেকে সব ধরনের মাদক দেশে অনুপ্রবেশ করছে। জল, স্থল ও আকাশপথে মাদক আসছে। মাদকের এই অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সারা দেশে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন সিন্ডিকেট।

তারা শহর-নগর, পাড়া-মহল্লা সবখানেই মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। সারা দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীকে এতে উদ্বুদ্ধ করছে। সমন্বয়কদের হাতেই এখন মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ। মাদক কারবারে জড়িয়ে অনেক সমন্বয়ক রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন।

রাজধানীর গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, পুরান ঢাকা এবং ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা শহরে সমন্বয়করা ভাগ হয়ে মাদক কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে গেলেই তাকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে। মব সৃষ্টি করে মারধরসহ সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।

সারা দেশের সব জায়গায় সরব উপস্থিতিতে থাকা সমন্বয়কদের তারা এককালীন, দৈনিক ও মাসিক চুক্তিতে টাকা দিচ্ছে। ডিএনসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলছেন, মাদক কারবারিরা সর্বদা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে টানার চেষ্টা করে। তাদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে। নিত্যনতুন লোকজন এসব কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

অল্প সময়ে ধনী হওয়ার প্রবণতা থেকে দেশের অসৎ লোকেরা ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে। মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হচ্ছে। মাদক কারবারি যে-ই হোক, তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, মাদক কারবারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত নতুন লোক যোগ হচ্ছে। পুরনো কারবারিরা তো আছেই। তারা নিত্যনতুন কৌশলে মাদক বহন ও বিক্রি করছে, এমনকি বিভিন্ন দেশ থেকে নিত্যনতুন মাদক নিয়ে আসছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিতই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মাদক জব্দ ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করছে। তবে দেশে যে পরিমাণ মাদক আছে, সেই পরিমাণ মাদক উদ্ধার করতে পারছে না। মাদকের বাহক বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলেও এর পেছনে রাঘব বোয়াল, পৃষ্ঠপোষক বা মূল হোতা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ