রাজধানীর ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রুপে বিদ্রোহ’ শীর্ষক ছয়দিনের প্রদর্শনী। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শুরু হয়ে প্রদর্শনী শেষ হবে ৫ আগস্ট। প্রতিদিন ৩টা থেকে রাত ৮টা অবধি চলবে প্রদর্শনী।
প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে ৩৬ জুলাইয়ের সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীদের হাস্যরসাত্মক কথা-বার্তা।
হাসির খোরাক জোগানো উক্তির মধ্যে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলকের ‘ইন্টারনেট একা একা বন্ধ হয়ে গেছে’, ‘শেখ হাসিনা পালায় না’, ‘স্বজন হারানোর বেদনা’, ‘সাপে কাটার বেদনা আপনার চেয়ে আর বেশি কে জানে’, ‘শি হ্যাজ মেড আস ফ্লাই’ সহ নানা উক্তি দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত ঐতিহাসিক ৩৬ দিনের গণআন্দোলনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে অলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা ও ইয়ার্কি এর আয়োজনে বিদ্রূপে বিদ্রোহ— ছয় দিনের এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে ব্যঙ্গের মাধ্যমে প্রতিরোধের শক্তিকে। প্রদর্শনী উপলক্ষে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারি উন্মুক্ত থাকবে সর্বসাধারণের জন্য।
রক্তাক্ত সেই জুলাইয়ের দিনগুলোতে ব্যঙ্গ হয়ে উঠেছিল প্রতিবাদের সবচেয়ে সাহসী মাধ্যমগুলোর একটি। যখন নাগরিকরা ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছিল, তখন তারা রাজনৈতিক প্রতিরোধের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করেছিল কার্টুন, মিম, দেয়ালচিত্র, ভিডিও, প্রতিবাদী গান এবং কবিতা। সৃজনশীলতার শক্তি আন্দোলনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। রসিকতা, বিদ্রূপ এবং অকপট সমালোচনার মাধ্যমে ব্যঙ্গ হয়ে উঠেছিল দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামের এক সম্মিলিত আহ্বান।
বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ সেই সাহসী ব্যঙ্গাত্মক প্রকাশগুলোকে একত্রিত করেছে; যা ঐ গণআন্দোলনের প্রতিরোধের চেতনাকে ধারণ করে। প্রদর্শনীতে রয়েছে— ব্যঙ্গচিত্র, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্ট ও পথচিত্রের একটি সংরক্ষিত আর্কাইভ; প্রতিবাদী গান এবং কবিতা পাঠ; ভিডিও ইনস্টলেশন; লাইভ পারফরম্যান্স, যার মধ্যে রয়েছে প্রভোকেটিভ মঞ্চনাটক (নাটক কম করো প্রিয়); ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন এবং অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যঙ্গ সবসময়ই বঞ্চিতদের অস্ত্র-ক্ষমতার প্রতি হাসি ছুড়ে দিয়ে এর অযৌক্তিকতাকে উন্মোচিত করার উপায়। এই প্রদর্শনী তাদের জন্য এক শ্রদ্ধাঞ্জলি, যারা সাহস এবং বুদ্ধিদীপ্ত কৌতুকের মাধ্যমে অন্ধকার সময়েও সত্য কথা বলতে পিছপা হননি।
এই প্রদর্শনী সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং এটি একযোগে স্মরণ, প্রতিরোধ এবং রাজনৈতিক জীবনে ব্যঙ্গের চিরকালীন ভূমিকা নিয়ে আলোচনার একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চায়।
প্রদর্শনীতে দেখনো কিছু চিত্র