শিরোনাম
৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র : মাহফুজ প্রয়োজনে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করবে বিএনপি: মির্জা আব্বাস লালমনিরহাটে ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে দুর্নীতি; জামায়াত নেতাকে শোকজ দিনাজপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মীদের মিছিলের চেষ্টা, ২ জন গ্রেপ্তার রংপুর কমিউনিটি মেডিকেলে এক মাসে ১০০টি সফল হার্ট অপারেশন সম্পন্ন এনসিপির অপরাজনীতি ও জুলাই বিক্রি বন্ধ করতে হবে : মাসুদ ৩ কোটি টাকা বিলের তদবির করতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধীর দুই ছাত্রনেতা আটক মিঠাপুকুরে বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ: আসামি পলাতক কাউনিয়ায় অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করায় স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা!  আ. লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করতে পারলে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি মিলবে
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্স-যুক্তরাজ্যের পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা কানাডার

ডেস্ক রিপোর্ট / ২২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এ ঘোষণা দেন। এর আগে ইউরোপীয় দুই পরাশক্তি ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বুধবার কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেন, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি চুক্তি কার্যকর হওয়ার আশা করেছিল অটোয়া, কিন্তু এখন আর সেই পথে এগোনো সম্ভব নয়। কার্নি জানান, “২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এর আগে চলতি মাসেই যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সও একই ধরনের ঘোষণা দেয়। তবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এ উদ্যোগ গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণে কী প্রভাব ফেলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ দুটি অঞ্চল নিয়েই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

কার্নি বলেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ও প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের পক্ষ থেকে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি এবং ২০২৬ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকারের ভিত্তিতেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, হামাস ফিলিস্তিনের ভবিষ্যতে কোনও ভূমিকা রাখতে পারবে না এবং তারা আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না—এটাই শর্ত। তবে অনেকের মতে, এই শর্ত একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। কার্নি বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ধরে রাখার মানে হচ্ছে, যারা শান্তিকে সহিংসতার ওপর প্রাধান্য দেয়, তাদের পাশে দাঁড়ানো।”

ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে। তাদের দাবি, এতে হামাস পুরস্কৃত হবে। এ মাসের শুরুতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির কথা বলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “তার কথা কোনও গুরুত্ব রাখে না। এতে কিছুই পরিবর্তন হবে না।”

মঙ্গলবার তিনি যুক্তরাজ্যের উদ্যোগেরও বিরোধিতা করেন। স্কটল্যান্ডে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি আলোচনায় আসেনি বলেও জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আপনি বলতে পারেন, এতে হামাসকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। আমি তা সমর্থন করি না। এটা আমার অবস্থান নয়।”

ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে আসছে, যদিও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অধিকাংশ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

গত বছর কানাডা মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কায় ইসরায়েলে নতুন অস্ত্র রপ্তানি অনুমোদন বন্ধের ঘোষণা দেয়। কিন্তু এ সপ্তাহের শুরুতে একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের একটি জোট ইসরায়েলি কর নথির ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, অস্ত্র রপ্তানি এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এই জোট কানাডা সরকারকে “মিথ্যার জাল” তৈরি করার অভিযোগ এনে ইসরায়েলে সব অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

এদিকে বুধবার কানাডার মুসলিম সম্প্রদায়ের জাতীয় পরিষদ প্রধানমন্ত্রী কার্নির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে একইসঙ্গে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কানাডার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে তারা।

তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের আচরণ ট্রাম্প প্রশাসনের সেই চাপের মতো, যেখানে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানাতে বলা হয়েছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “কানাডাকে অবশ্যই আমাদের মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে হবে। বিশেষ করে যখন ট্রাম্প প্রশাসন গাজা দখলের পক্ষে দাঁড়ায় এবং একইসঙ্গে কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ