শিরোনাম
গুলশানে চাঁদাবাজি; গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের দুই কেন্দ্রীয় নেতা, বৈষম্যবিরোধী থেকে ৩ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার ফ্রান্সসহ ইউরোপের ৩ দেশে কমিটি দিল এনসিপি রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মহানবী (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে যুবক আটক সৈয়দপুরে চব্বিশ দিনে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনঃ আসামী গ্রেফতার। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করলে বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন কাদের সিদ্দিকী কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির নির্বাচনমুখী সাধারণ সভা চাঁদা দাবি করা হয় ১ কোটি, ১০ লাখ নেওয়ার পর আটকে গেলেন সমন্বয়কসহ ৫ এনসিপি সরকার গঠন করলে ৬৪ জেলায় চাকরির ব্যবস্থা করব : নাসীরুদ্দীন সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, হাতেনাতে ৫ জন গ্রেপ্তার রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি স্থগিত
রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: সেদিন ৫ বন্ধুকে একাই বাঁচিয়েছিলেন সূর্য

ডেস্ক রিপোর্ট / ৩০ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

গত সোমবার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। এদিকে মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের পর এক শিক্ষার্থী তার ৫ বন্ধুকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছে। এমন একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক শারমিন সাথী।

ফেসবুক পোস্টে শারমিন সাথী লেখেন, আমাদের ছেলে সূর্য সময়ের একটা ভিডিও দেখলাম। সেখানে সূর্য ওর স্কুল ভবনের কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছে। এই ভিডিওটা অনেকে হয়তো দেখেছেন। সূর্য কীভাবে বেঁচে গেলো সে কথা বলি। সূর্য রবিবারে ক্লাসে না যাওয়ায় হোমওয়ার্ক ছাড়াই পরের দিন ২১ জুলাই সোমবার ক্লাসে গিয়েছে। সেজন্য ডিটেনশন ক্লাসে ওর ক্লাস টিচার যেতে বলে। ডিটেনশন ক্লাস বলতে যারা হোমওয়ার্ক করে না বা ক্লাসে পড়া দিতে পারে না তাদেরকে ছুটির পরে এক্সট্রা টাইম স্কুলে রেখে পড়া আদায় করে বাসায় পাঠানো হয়।

মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক সাথী বলেন, সূর্যের ক্লাস টিচার বাপ্পি স্যার সূর্যসহ পাঁচজনকে বলে, তোমরা ওই কর্নারের ক্লাস রুমে যাও। আমি একটু পরে আসছি। সূর্যসহ পাঁচজন একেবারে ভবনের শেষ রুমের আগের রুমে যাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ে বিকট আওয়াজ শুনে সূর্য পেছন দিকে তাকিয়ে দেখে ওরই ক্লাসরুমের সামনে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। একজন ক্লাস রুম থেকে বের হতে গিয়ে মূহুর্তের মধ্যে পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো। ওরা ঘাবড়ে গিয়ে দ্রুত কর্নারের ক্লাস রুমে ঢুকে গেলো।

তিনি বলেন, ওদের ডিটেনশন রুম পর্যন্ত আগুন পৌঁছোতে পারেনি। রুমের ভেতর আগুনের তাপ এসে তাপমাত্রা ৭০° সেন্টিগ্রেডের মতো ছিল (সূর্যের কথা অনুযায়ী)। সূর্যের মনে হচ্ছিল শরীর তাপে পুড়ে যাচ্ছে। ওরা পাঁচজন জানালার কাছে গিয়ে শ্বাস নেবার চেষ্টা করছিল। কারণ তখন রুমের ভেতর কালো ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে পারছিলো না। শ্বাস নিতে গেলে মনে হচ্ছিল ভেতরটা পুড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হবার পর সূর্য ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই কয়েকজন ছাত্র ভীড়ের ভেতর থেকে হাত দিয়ে ইশারা করছে ডান দিকে যাবার জন্য। সূর্য ডান দিকে তাকাতেই দেখে ওখানে গ্রিল কেটে একটা বের হবার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ও দেখে এগিয়ে গিয়ে বলে, আপনারা দাঁড়ান। আমি আমার বন্ধুদের নিয়ে আসছি। সূর্য তাড়াতাড়ি ওর বন্ধুদের ডেকে বাইরে নিয়ে আসলো। এরপর কার্নিশের ওপরে দাঁড়িয়ে থেকে আগে বন্ধুদের নামার সুযোগ করে দিলো।

আমাদের ছেলেকে আমরা যে শিক্ষা দিয়ে বড় করেছি তার যথাযথ ব্যবহার ও করে দেখালো জাতিকে। ছেলেকে নিয়ে আমাদের আর কোনো চিন্তা নেই। আমি কখনো ওকে বলিনি, বাবা, তোমাকে এ প্লাস পেতে হবে। কখনো বলিনি তোমাকে ফার্স্ট হতে হবে। আমি সব সময় চেয়েছিলাম আমার ছেলে সূর্য যেন একজন মানবিক মানুষ হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ