রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের সরকারি রাস্তার পাশ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বালারহাট হামিদিয়া আলীম মাদ্রাসার সুপার তাহেরুল ইসলাম (৫০) এর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বাঁধা উপেক্ষা করেই রাস্তার পাশ থেকে গাছগুলো কাটা হচ্ছে এমনটাই দাবি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতনের।
গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে গাছ কাটার শ্রমিক দিয়ে ৩টি মেহগনি গাছ কেটে পাশের জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। বাকি আরও ৮টি ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে নিয়ে বাড়িতে গেছেন সুপার তাহেরুল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার ৫নং বালারহাট ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের চৌপথি হতে কাঠালতলী জামে মসজিদ এলাকায় সবুজে ঘেরা পায়ে হাঁটার কাঁচা রাস্তার দু-ধারে বেশ বড় বড় বাহারি গাছের সারি রয়েছে। রাস্তার ধারের জমির মালিক তাহেরুল ইসলাম নিজের হাতে বপণ করা গাছ দাবি করে গত ১০ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত অবাধে গাছগুলো কর্তন করেছেন।
বালারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতন দাবি করে বলেন, গাছগুলো রাস্তার। প্রায় দেড় যুগ আগে গাছ গুলো বপণ করা হয়েছে। তবে বালারহাট হামিদিয়া আলীম মাদ্রাসার সুপার তাহেরুল ইসলাম গাছগুলো রোপন করেছেন দাবি করে কেটে নিয়েছেন।যা বিধি মোতাবেক হয়নি। আমি তাকে বিধি মোতাবেক গাছ কাটার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি শুনেন নাই। পরে গাছ কাটার খবর পেয়ে গাছগুলো আটক রাখার জন্য চৌকিদার আকমল এবং খায়রুল ও ইউপি সদস্য আনোয়ার কে দায়িত্ব দিয়েছি। এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালারহাট হামিদিয়া আলীম মাদ্রাসার সুপার তাহেরুল ইসলাম দাবি করে বলেন, জমির পাশে তিনি গাছ রোপন করেছিলেন। তার জমিতেই গাছগুলো ছিল বলে তিনি কেটে নিয়েছেন। এর বেশি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান তিনি।
চৌকিদার আকমল হোসেন এবং খায়রুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা এলাকাবাসী সুত্রে গাছ কাটার খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, তখন মাত্র ২টি মেহগনি গাছ কেটেছে। আমরা তখনই তাদের গাছ কাটতে নিষেধ করি এবং কাটা গাছগুলো ওখানেই রাখতে নির্দেশ দিয়ে চলে এসেছি। পরে শুনি তাহেরুল মাওলানা সাহেব আমাদের নির্দেশ অমান্য করে সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা মুল্যের ৩টি বড় বড় মেহগনি ও ৮টি ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছেন।
নাম প্রকাশ্যে একাধিক এলাকাবাসী জানান, তাহেরুল মাওলানা ক্ষমতার দাপটে সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিয়েছেন। এর আগেও তিনি ক্ষমতার দাপটে বালারহাট হামিদিয়া আলীম মাদ্রাসার কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। নিরীহ গ্রামবাসী তাদের দাপটের ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিল্লুর রহমান জানান,সরকারি রাস্তার পাশ থেকে গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই,কেউ যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।