লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-নির্ভর কুটির শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। বাঁশের মূল্যবৃদ্ধি, কাঁচামালের সঙ্কট, আধুনিক বিকল্প সামগ্রীর প্রসার এবং আর্থিক অনিশ্চয়তা মিলিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে এই শিল্প। ফলে পূর্বপুরুষের পেশা ধরে রাখতে না পেরে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন পেশা পরিবর্তনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময় উপজেলার বহু পরিবার বাঁশ ও বেত দিয়ে গৃহস্থলির নানান প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কুলা, ডালি, ঠালা, চালনি, চাঁটাই, ডোল, ঝাঁপি, ঝাড়ুসহ কৃষি ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত এসব পণ্য স্থানীয় হাটবাজারে বিক্রি করে স্বচ্ছলভাবে চলতো সংসার।
তবে বর্তমানে এসব পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। প্লাস্টিক ও আধুনিক সামগ্রীর সহজলভ্যতায় বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র তেমন একটা বিক্রি হচ্ছে না। অন্যদিকে, একটি বাঁশের দাম এখন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত, কিন্তু দুদিন খেটে বানানো পণ্য বিক্রি করে সেই খরচই উঠে আসে না। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে ভারসাম্য থাকে না—ফলে লোকসানে পড়ছেন কারিগররা।
ধান কাটার মৌসুমে আগে এসব পণ্যের চাহিদা থাকলেও এবার সেই চাহিদাও তুলনামূলকভাবে কম। ধানের দাম কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে কুটির শিল্পের ওপরও।
স্থানীয় কারিগরদের দাবি, সরকার বা বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে অনুদান, প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে এখনো এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। নইলে অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে এই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিল্প।