ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা সুফিয়া খাতুন তাঁর মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে বসবাস করতেন পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া এলাকার একটি ভাঙাচোরা ঝুপড়িতে। গত বর্ষায় প্লাস্টিক ও বাঁশের বাতা দিয়ে তৈরি ঘরের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে বিছানা ভিজে যেত। নাতি-নাতনিদের নিয়ে ঘুমাতেও পারতেন না তিনি।
তিন বেলার খাবার জোগাড় করাই যেখানে কঠিন, সেখানে টিনের ছাউনি দিয়ে ঘর বানানো ছিল তাঁদের কাছে স্বপ্নের মতো। অন্যের বাসায় দিনমজুরের কাজ করে চলতো তাঁদের সংসার।
এই দুঃসহ জীবনের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পঞ্চগড় জেলা শাখা। সংগঠনটির নিজস্ব অর্থায়নে সুফিয়া খাতুনকে উপহার দেওয়া হয়েছে টিনের ছাউনি দেওয়া দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি ঘর।
সম্প্রতি ঘরটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে সুফিয়া খাতুনের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন পঞ্চগড় জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা অধ্যাপক ইকবাল হোসেন। এ সময় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ষাটোর্ধ্ব সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘বয়সের ভারে তেমন কোনো কাজ করতে পারি না। মেয়ের আয়ে কোনোমতে সংসার চলে। ঘরের ছাদ দিয়ে পানি পড়তো, কিন্তু টাকার অভাবে মেরামত করতে পারিনি। অনেক কষ্টে দিন কেটেছে। এখন যেহেতু ঘর পেয়েছি, আল্লাহর রহমতে শান্তিতে ঘুমাতে পারি। যারা আমাকে ঘর উপহার দিয়েছেন, তাদের জন্য দোয়া করি—আল্লাহ যেন তাদের এমন ভালো কাজের তাওফিক দেন। তারা যেন এভাবেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’
পঞ্চগড় জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা অধ্যাপক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা জানতে পারি, এই এলাকায় একজন ষাটোর্ধ্ব মা অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর একমাত্র ঘরটিও ভাঙাচোরা, বৃষ্টির দিনে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। তাই আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছি এবং নিজেদের অর্থায়নে একটি টিনের ছাউনি দেওয়া দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর উপহার দিয়েছি। আমরা আশা করি, তিনি তাঁর মেয়ে ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভালোভাবে থাকতে ও ঘুমাতে পারবেন।’