শিরোনাম
হিলিতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেলো শিক্ষার্থীর ইরানে সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল রাশিয়া এবার মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান ইসরায়েলি নেতাদের কোনো ছাড় নেই: খামেনি দেবীগঞ্জে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বর্ণিল মৌসুমী ফল উৎসব হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নিলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে : ইরান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ক্রমাগত মিথ্যাচার করছেন: বিএনপি নেতা ইশরাক লন্ডন বৈঠক পছন্দ হয়নি বলেই নারাজ একটি দল: মির্জা ফখরুল ইসরায়েলের এক ডজন ড্রোন ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে ইরান দেশে ফিরে যে বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

লঘুচাপে টানা বর্ষণের আভাস

ডেস্ক নিউজ : / ৭ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

এবার সঘন মেঘমালায় ভেসে এসেছে আষাঢ়। সাগরে লঘুচাপ, আকাশ জুড়ে মৌসুমি বায়ুর দাপটে বৃষ্টি ঝরছে দেশ জুড়ে। কোথাও রোদ্র-ছায়ার লুকোচুরি আবার কোথাও অঝোরধারায় বারিপাত। কয়েক দিন তাতানো রোদ্দুর আর ওষ্ঠাগত গরমের পর এই বর্ষণ স্বস্তি এনেছে জনপদগুলোতে। রাজধানী ঢাকায়ও গরম কমেছে। দিনে দিনে বাড়ছে বর্ষা। গতকাল ঢাকায় ছয় ঘণ্টায় ঝরেছে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি।

আবহাওয়া বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্ষাবাহী আষাঢ়ষ্য মৌসুমি বায়ু প্রায় সারা দেশই ছেয়ে ফেলেছে। এখন বৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্থল ভাগের ওপরে মৌসুমি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষনে খুলনা বিভাগের ওপরে এর কেন্দ্র অবস্থান করছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রাডার থেকে প্রাপ্ত রিফলেকটিভিটি মানচিত্র অনুসারে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টায় মৌসুমি লঘুচাপটির কেন্দ্র অবস্থান করছিল খুলনা বিভাগের যশোর জেলার ওপরে। এই লঘুচাপের কারণে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণায়মান মেঘ হতে বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগের বেশির ভাগ জেলা ও ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপরে। লঘুচাপটির কেন্দ্র বর্তমান অবস্থান (যশোর জেলা) থেকে সরাসরি উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে আগামী দুই দিন (বুধ ও বৃহস্পতিবার)। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে। সে সঙ্গে মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্থলভাগের ওপরে একটি মৌসুমি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় রাজ্যে একটানা বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা (বান্দরবন, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি) এবং সিলেট জেলার ওপরে ২৩ জুন পর্যন্ত সাত দিন একটানা সম্ভাব্য বৃষ্টির কারণে এই ছয়টি জেলায় পাহাড় ও টিলা ধসের প্রচণ্ড ঝুঁকি থাকবে। পাহাড়ের ঢালে কিংবা পাহাড়ের ওপরে বসবাস করা মানুষের নিরাপদ স্থানে সরিয়া নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত চার দিন: ভারী থেকে খুবই ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে: সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, শেরপুর, কক্সবাজার, বান্দরবন জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে: চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট। আবারও বর্ষাকালের নিয়মিত বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ২৩ থেকে ২৭ জুনের মধ্যে দেশব্যাপী মাঝারি থেকে ভারী মানের বৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়—রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

এদিকে রাজধানী ঢাকায় গতকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নিয়ম অনুযায়ী, এটিকে ‘মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৮ শতাংশ।

দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতেই পানির নিচে খুলনার দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা

এদিকে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে খুলনা নগরীর অধিকাংশ সড়ক। বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর ও সড়কের পাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষ। মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতেই পানির নিচে খুলনার দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা। গতকাল মঙ্গলবার বৃষ্টিতে অধিকাংশ সড়কে হাঁটুপানি জমেছে। সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় কোথাও কোথাও সড়কে যানবাহন আটকা পড়েছে। ফলে যানজটে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। রাতের সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর একাদিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তলিয়ে যাওয়াই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। নগরীর এ দুর্বিষহ অবস্থার জন্য সিটি করপোরেশনের দূরদর্শিতার অভাব, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা, খাল-বিল দখল আর সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবকে দায়ী করছেন নগরবাসী। খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) এলাকার মধ্যে মোট সড়ক আছে ১ হাজার ২১৫টি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ভোররাতের বৃষ্টিতে নগরীর টুটপাড়া, রয়েল মোড়, সাত রাস্তা মোড়, মিস্ত্রিপাড়া, খালিশপুর, নিউ মার্কেট এলাকা, শান্তিধাম মোড়, বসুপাড়া, ফুলবাড়িগেট, আলমনগর, মুজগুন্নি আবাসিক এলাকা, কুয়েট রোড, দৌলতপুরের একাধিক এলাকাসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ