নারীর এগিয়ে চলার গল্প মানেই যেন কাঁটাভরা পথ পেরিয়ে আলো খোঁজা। এমনই এক প্রেরণাদায়ক গল্পের নাম ফৌজিয়া ইয়াসমীন চুননু—একজন সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা, রাজনৈতিক নেত্রী এবং অদম্য নারী। তিনি এবার আসন্ন মিঠাপুকুর থানা বিএনপির কাউন্সিলে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন।
ফৌজিয়া ইয়াসমীন শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি এক সংগ্রামী নারীর প্রতিচ্ছবি। রাজনৈতিকভাবে সচেতন পরিবারে বড় হওয়া ফৌজিয়া শুরুতে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও, তাঁর প্রয়াত স্বামী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম চুননুর হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মিঠাপুকুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি হিসাবে যুক্ত আছেন ।
মরহুম চুননু ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য, রংপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মিঠাপুকুর থানার সাবেক বিএনপি সভাপতি, রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক নেতা এবং ইমাদপুর মফিজিয়া শিশু সদন (এতিমখানা)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের উপদেষ্টা কমিটিতেও যুক্ত ছিলেন।
২০১১ সালের জুলাই মাসে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে রংপুর ফেরার পথে চরম এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসার পর চিরবিদায় নেন।
স্বামীর মৃত্যুর পর সমাজ, রাজনীতি ও পারিবারিক নানা চাপে থেকেও ফৌজিয়া হার মানেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত হলেও মাথা নত করেননি। তিনি বলেন,
“একজন নারী হিসেবে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকা সহজ ছিল না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি—সততা, নিষ্ঠা আর জনগণের ভালোবাসা থাকলে কোনো বাধাই বড় নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“আজ আমি শুধু একজন নেত্রী নই—আমি একজন মা, একজন শিক্ষক, একজন সমাজকর্মী এবং মিঠাপুকুরের প্রতিটি মানুষের ভালোবাসায় গড়ে ওঠা একজন নিজস্ব মানুষ। আগামী নির্বাচনে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আপনাদের দোয়া ও সমর্থন চাই। আমার বিজয় মানে হবে—একজন নারীর লড়াইয়ের জয়।”