পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় জামায়াত কর্মী মোকছেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুর একটার দিকে উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের গাজকাটী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মোকছেদুল ইসলাম টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের বটতলী নতুনপাড়া এলাকার অফিজদ্দীনের ছেলে। তিনি স্থানীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ জুন পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জুয়েল রানা দেবীগঞ্জ থানায় ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ৭২ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ৩০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলার ৪০ নম্বর আসামি করা হয় জামায়াত কর্মী মোকছেদুল ইসলামকে।
এদিকে পরিবারের অভিযোগ, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার পরও শুধুমাত্র জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মোকছেদুল ইসলামের স্ত্রী শিউলি বেগম প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, আমার স্বামী বুধবার সকালে কাজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পরে শুনি তাকে গাজকাটী বাজার থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। জমি নিয়ে কম্পানি ও মোস্তফাদের সাথে দ্বন্দ্ব থাকায় তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমার স্বামী আওয়ামী লীগ করেন না, তিনি জামায়াতে ইসলামী করেন।
অন্যদিকে মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জামায়াত ও নির্দলীয় ব্যক্তিদের আসামি করায় সে সময় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত জুন মাসে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জামায়াতের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে যেন কাউকে অন্যায়ভাবে হয়রানি না করা হয়।
তবে মামলা দায়েরের দুই মাস না যেতেই মামলার ৪০ নম্বর আসামি মোকছেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করায় স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. বেলাল হোসেন বলেন, মামলা হওয়ার পরই আমরা পুলিশকে জানাই যে আমাদের দুইজন কর্মীসহ নির্দলীয় কয়েকজনকে অন্যায়ভাবে আসামি করা হয়েছে। ওসি তখন বলেছিলেন হয়রানি করা হবে না। অথচ এখন জেনেশুনে আওয়ামী লীগের মামলায় জামায়াত কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।
জামায়াত কর্মীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোয়েল রানা বলেন, মোকছেদুল সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এজাহারনামীয় আসামি। এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
থানায় মামলা দায়েরের সময় পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত করে যাচাই-বাছাই শেষে মামলা গ্রহণ করে। তাহলে এই মামলায় কেন জামায়াত কর্মীদের নাম আসামির তালিকায় রাখা হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।