রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পাগলারহাট দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক নিয়োগ ও সরকারি অনুদান আত্মসাৎ, এবং চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন এলাকাবাসী, প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক কমিটির সদস্যরা।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) স্থানীয়রা মাদ্রাসা সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখলে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগকারীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সুপার শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার সাদাত লিমনের কমিটির সময়ে শিক্ষক নিয়োগ ও বিভিন্ন সরকারি অনুদানের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া, চারজন ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁদের ছেলেদের মাদ্রাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন । ভুক্তভোগীরা হলেন: মোঃ বাদশা সরকার- ১৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, মোঃ নজরুল ইসলাম- ১৪ লক্ষ টাকা, মোঃ নুরনবী মিয়া- ৬ লক্ষ টাকা, মোঃ ছাবু মিয়া- ৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, চাকরি না পেয়ে তাঁরা নিজেদের প্রতারিত মনে করছেন। গত ২০ জুলাই, ২০২৫ ইং তারিখে এ বিষয়ে একটি সালিশ বৈঠক হলে বিষয়টি সবার সামনে আসে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সুপার শহিদুল ইসলাম গত ২০ জুন, ২০২৫ ইং তারিখে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখেননি। বরং উল্টো ওই চারজনের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুপারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং নিয়মিত অনুপস্থিতির অভিযোগও রয়েছে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী ছাবু মিয়া জানান, আমার থেকে সুপার মোঃ শহিদুল ইসলাম ৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছে আমার ছেলেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে, চাকরি তো দেইনি উল্টো টাকা চাইতে গেলে আমার নামে থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেছে । আমি আমার ন্যায্য টাকা ফেরত চাই সেইসাথে এই সুপারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি ।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার শহিদুল ইসলামের সাথে পাগলারহাট দাখিল মাদ্রাসার দেখা করতে গেলে মাদ্রাসা চলাকালীন সময়েও তার দেখা মেলেনি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।