লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস। সরকারিভাবে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও এখানে নেই কোনও চোখের চিকিৎসক।
এ উপজেলার মানুষগুলোর ভরসা প্রাইভেট ক্লিনিক, জেলা সদরের হাসপাতাল অথবা প্রাইভেট চেম্বার। এতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ও অপচয় হচ্ছে।
বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে চোখের ওপর চাপ বাড়লেও এ নিয়ে নেই কোনো সতর্কতাবার্তা। প্রতিদিনই নানা সমস্যা নিয়ে রোগীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। এই রোগীদের মধ্যে বড় অংশ চোখের রোগী। কিন্তু উপজেলায় সরকারি কোনো চোখের হাসপাতাল নেই। এর চেয়েও বড় সমস্যা চিকিৎসকই নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা চোখের রোগীদের অনুমান নির্ভর চিকিৎসা দিচ্ছেন মেডিকেল অফিসার অথবা উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা। আবার বড় সমস্যা দেখা দিলেই ছুটতে হচ্ছে জেলা সদরের ক্লিনিকে অথবা চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে। এতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি পোহাতে হচ্ছে নানাবিধ ভোগান্তী।
জানাগেছে, উপজেলার মানুষের চিকিৎসার জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অন্যান্য চিকিৎসকের পদশূন্যের পাশাপাশি চোখের চিকিৎসকের পদই রাখা হয়নি। ফলে অন্যান্য রোগের মতোই কর্মরত চিকিৎসক অনুমান নির্ভর চোখেও চিকিৎসা দিয়ে থাকছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮০ শতাংশ চিকিৎসকের পদশূন্য রয়েছে।
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্ত্রোপচার। চিকিৎসক না থাকায় গুরুতর অসুস্থ রোগীকে যেতে হচ্ছে লালমনিরহাট অথবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে মুমূর্ষু রোগীকে অন্যত্র নেওয়ার পথেই অনেকেরই মৃত্যু ঘটছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষকে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে তেমনি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যক রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালে প্যাথলজিসহ বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি থাকলেও শুধুমাত্র চিকিৎসক সংকটে সেগুলো নিয়ে নিয়মিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আলী রাজীব মো. নাসের বলেন, ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কার্ডিওলজি, শিশুরোগ, সার্জারি, চক্ষুবিদ্যা, গাইনী, স্কিন এলডিডি, অর্থোপেডিক, মেডিসিন, সার্জারি, ইএনটি ও অ্যানেস্থেশিয়া সহ মোট ২৯ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৯ জন। আমাদের ডাক্তার সংকট রয়েছে। শূন্য পদের তালিকা আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।