শিরোনাম
আজ রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা গুলি চালিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার’ জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ২০২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ : তারেক রহমান সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে শিবিরের তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু জুলাই-আগস্ট না হলে, আরেক মাস আন্দোলন করে হয়তো সরকার ফেলে দিতো বিএনপি:মির্জা আব্বাস জামায়াত একটি ‘ভণ্ড ইসলামী দল’: হেফাজতের আমির মধ্যরাতে জুলাই ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা হান্নান মাসউদের সরকারের বরাদ্দের বিশেষ ট্রেন পছন্দ না হওয়ায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ফিরে দেখা ৫ আগস্ট: যেদিন জনতার শক্তিতে বদলে গিয়েছিল ইতিহাস
মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৪১ অপরাহ্ন

২০২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ : তারেক রহমান

ডেস্ক রিপোর্ট / ৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ১৯৭১ সাল ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ। আর ২০২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। ’৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ ভোলেনি। ’২৪-এর গণঅভ্যুথানের শহীদদেরও বাংলাদেশ ভুলবে না।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট। আজ থেকে ঠিক একবছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা প্রিয় গণতন্ত্র প্রিয় জনগণের জন্য দিনটি আনন্দের। দিনটি বিজয়ের। রাহুমুক্ত বাংলাদেশের এই দিনটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাঁবেদারমুক্ত বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবছর এ দিনটিকে স্বাধীনভাবে সানন্দে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে উপভোগ করবে। স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার চর্চার নতুন অঙ্গীকারে উদ্বুদ্ধ হবে।

তিনি বলেন, একুশ শতকের এই বাংলাদেশে পলাতক স্বৈরাচার এক বিভীষিকার রাজত্ব কায়েম করেছিল। গুম-খুন, অপহরণ, হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিপীড়নকে সাধারণ এবং স্বাভাবিক ঘটনায় রূপান্তর করেছিল। এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনের সময় বিএনপিসহ ভিন্ন দল ও মতের গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির লাখো কোটি নেতাকর্মীর জন্য দেশকে নরকে পরিণত করে রাখা হয়েছিল। শত শত মিথ্যা মামলার কারণে ভিন্ন দল এবং মতের লাখ লাখ নেতাকর্মী সমর্থককে ঘরবাড়ি ছাড়া করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণতন্ত্রকামী মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে পলাতক স্বৈরাচারের নির্দেশে দেশে শত শত গোপন বন্দিখানা ‘আয়নাঘর’ বানানো হয়েছিল। সেই আয়নাঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জলজ্যান্ত মানুষকে দিনের পর দিন রাতের পর রাত বছরের পর বছর আটকে রাখা হতো। অনেককে চিরতরে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী কিংবা কমিশনার চৌধুরী আলমের আজও খোঁজ মেলেনি।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ দেশের সব সাংবিধানিক বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছিল। সংবিধান উপেক্ষা করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল। দেশকে চিরতরে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিনষ্ট করার সব আনুষ্ঠানিকতা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। বই, খাতা, কলমের পরিবর্তে রাজনীতির নামে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল লগি-বৈঠা-হাতুড়ি-চাপাতি।

তিনি বলেন, বিপর্যস্ত করে দেওয়া হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ফেলা হয়েছিল। দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেওয়া হয়েছে। অন্যায় অনিয়ম অনাচার দুরাচার লুটপাট দৈনন্দিন চিত্র হয়ে উঠেছিল। দেশে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ব্যক্তিতন্ত্র।

তারেক রহমান বলেন, তবে ফ্যাসিস্টের শেষ রক্ষা হয়নি। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ, ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, মুটে মজুর, গার্মেন্টস কর্মী, হোটেল-রেস্তোরাঁ কর্মী, পরিবহন শ্রমিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গৃহবধূ, নারী-শিশু এমনকি আমাদের মায়েরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে এসেছিল। গণঅভ্যুত্থান দমন করতে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। কোলের শিশু, শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ, আমাদের এসব সাহসী সন্তানকে বুকে গুলি করে শহীদ করে দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, শুধু ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানেই দেড় হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিক, নারী-শিশু-বৃদ্ধ, সাংবাদিক, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, ফ্যাসিস্টের গুলির নিশানা থেকে কাউকেই রেহাই দেওয়া হয়নি। এই অভ্যুত্থানে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ। হাত-পা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারিয়ে আমাদের শত শত সন্তান, শত শত ভাই ও বোনেরা চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন কিংবা চোখ হারিয়ে আজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, এ জন্য আমি বলি, ১৯৭১ সাল ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ। আর ২০২৪ সালে ছিল স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। ’৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ ভোলেনি। ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদেরও বাংলাদেশ ভুলবে না। ’৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা অর্জন, স্বাধীনতা রক্ষা, স্বৈরাচার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন এভাবে ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে লাখো মানুষ শহীদ হয়েছেন। আজকের এই দিনে আমি আবারও সব শহীদের অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ