শিরোনাম
নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায় বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাবেন জুলাই আন্দোলনে গুরুতর আহতরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট স্মরণে ১৮ জুলাই বিনা মূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট পাবেন গ্রাহকরা কিশোরগঞ্জে লেয়ার মুরগি পালনে সফল খামারিরা ফোনে কল করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৫ সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত ৭ সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে একইসাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন মা ও ছেলে ইউটিউবের লাইভ ক্লাসে অশ্লীলতা; ‘অন্বেষণ’ কোচিং-এর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে খাঁচায় বন্দি চার সন্তান নিয়ে রাস্তায় ঘুরছেন মা
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:২৬ অপরাহ্ন

২০০ টাকার টিউশনি করে পররাষ্ট্র ক্যাডার সোহেল

ডেস্ক রিপোর্ট / ৩২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫

পাঁচটি টিউশন করে কোনোমতে চলে নিজের খরচ। এক সময় ২০০ টাকায় টিউশনি করেও সংসারের খরচ জুগিয়েছেন। কখনো কষ্ট লুকিয়েছেন, কখনো আত্মীয়দের তিরস্কারে নীরবে কেঁদেছেন। এমন কঠিন বাস্তবতা পেরিয়ে আজ মো. সোহেল রানা একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের এই প্রাক্তন শিক্ষার্থীর গল্প শুধু বিসিএস উত্তীর্ণ হওয়ার নয়—এটি এক তরুণের হার না মানা জীবনের গল্প।

বাবা অন্ধ, সংসারে টানাটানি। রাজশাহীতে একসঙ্গে পাঁচটি টিউশন করে কোনোমতে চলে নিজের খরচ। এক সময় ২০০ টাকায় টিউশনি করেও সংসারের খরচ জুগিয়েছেন। কখনো কষ্ট লুকিয়েছেন, কখনো আত্মীয়দের তিরস্কারে নীরবে কেঁদেছেন। এমন কঠিন বাস্তবতা পেরিয়ে আজ মো. সোহেল রানা একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের এই প্রাক্তন শিক্ষার্থীর গল্প শুধু বিসিএস উত্তীর্ণ হওয়ার নয়—এটি এক তরুণের হার না মানা জীবনের গল্প।

নওগাঁর মহাদেবপুরের ছেলে সোহেল। পরিবারের আর্থিক দুরবস্থা তাকে বাধ্য করে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই টিউশন করতে। ২০১৪ সালে তার বাবার ব্রেইন স্ট্রোক হওয়ার পর পুরো সংসারের বোঝা আরও বাড়ে। অন্ধ বাবার পাশে দাঁড়াতে সোহেল নিজের পড়াশোনার খরচ চালান টিউশনির টাকায়

তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘টিউশনি না করলে চলত না। প্রতিদিন ঘুরে ঘুরে টিউশন খুঁজেছি। রাজশাহীতে টিউশনের জন্য ১০০-২০০ টাকা পাওয়া যেত। তবু কাজ চালিয়ে নিয়েছি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের পাশাপাশি সংসার টানার লড়াই তাকে করে তোলে আরও দৃঢ়চেতা।

স্নাতক শেষ করেই যেন জীবনের বড় যুদ্ধ শুরু। চাকরি না পাওয়ায় আত্মীয়দের কটাক্ষ, বন্ধুদের চাকরি পাওয়া আর নিজের ব্যর্থতায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। বই কেনা, ঢাকা যাতায়াতের খরচ—সবই টিউশন করে জোগাড় করতে হয়েছে। তবু থেমে যাননি। দিনের পর দিন ১০-১২ ঘণ্টা পড়েছেন, নিজেকে ভেঙে গড়েছেন।

২০২১ সালে কোভিডের পর পুরোদমে শুরু হয় বিসিএস প্রস্তুতি। প্রথমে ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নির্বাচিত হন; এরপর ৪৪তম বিসিএসে কাঙ্ক্ষিত পররাষ্ট্র ক্যাডারে জায়গা করে নেন। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছরের সংগ্রামের এটি এক অনন্য অর্জন।

নিজের অনুভূতি প্রকাশে আবেগাপ্লুত সোহেল বলেন, ‘অনেকদিন ধরে স্বপ্ন ছিল পররাষ্ট্র ক্যাডার হওয়া। আল্লাহর রহমতে তা পূরণ হয়েছে। বাবা-মা, স্ত্রী, বন্ধুরা সবাই অনেক খুশি।’

ভবিষ্যতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করতে চান সোহেল। প্রবাসে চাকরি ও যাতায়াত যেন সহজ হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

যে তরুণ একসময় বই কেনার টাকায় টান পড়লে আত্মগ্লানিতে ডুবতেন, আজ তিনি শত শত তরুণের অনুপ্রেরণা। তরুণদের প্রতি তার বার্তা, ‘সফলতা চায় বললেই হয় না—তার জন্য পরিশ্রম, ডেডিকেশন, আত্মবিশ্বাস থাকতে হয়। দিনে অন্তত ৮-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা ছাড়া বিসিএস এখন কঠিন।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ