শিরোনাম
পঞ্চগড়ে ৯ জনকে পুশ ইন করল বিএসএফ ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র : মাহফুজ প্রয়োজনে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করবে বিএনপি: মির্জা আব্বাস লালমনিরহাটে ইউএনওর স্বাক্ষর স্ক্যান করে দুর্নীতি; জামায়াত নেতাকে শোকজ দিনাজপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মীদের মিছিলের চেষ্টা, ২ জন গ্রেপ্তার রংপুর কমিউনিটি মেডিকেলে এক মাসে ১০০টি সফল হার্ট অপারেশন সম্পন্ন এনসিপির অপরাজনীতি ও জুলাই বিক্রি বন্ধ করতে হবে : মাসুদ ৩ কোটি টাকা বিলের তদবির করতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধীর দুই ছাত্রনেতা আটক মিঠাপুকুরে বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ: আসামি পলাতক
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে চিকিৎসককে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

স্থানীয় রিপোর্ট / ১২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫

দিনাজপুরের হিলিতে এক চিকিৎসককে মারধর ও তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আব্দুলাহ আল মামুন নামের এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতাল থেকে রোগীর ছাড়পত্র দেওয়াকে ঘিরে এ ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। এর প্রতিবাদে দেড় ঘণ্টা কার্যক্রম বন্ধ রাখেন হাসপাতালে কর্মরতরা। ঘটনাকে ঘিরে চিকিৎসকের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অভিযুক্ত আব্দুলাহ আল মামুন হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের পদে রয়েছেন।

হাসপাতালে থাকা রোগীর স্বজন নাসরিন আকতার বলেন, ‘চিকিৎসক এসে ওয়ার্ডের সব রোগীকে দেখার পর যখন নিচে নেমে যায় ওই সময় প্রচুর চিৎকার চেচামেচি করছিল একজন। ডাক্তারকে বাপ করে ডাকাবো, চাকুরি খাবো, পিটাবো, এ ধরণের হুমকি ধামকি দিতে থাকে ওই ব্যক্তি। এসব শুনে আমি নিচে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর এসে শুনি ডাক্তারকে নাকি মারধর করেছে, সেসব নিয়ে নিচে গোলমাল চলছে। ’

হাসপাতালের ২ নম্বর কেবিনে থাকা রোগীর স্বজন ফাইম বাবু বলেন, ‘আমার বাবাকে দেখার পরে পাশের ৩ নম্বর কেবিনে যান চিকিৎসক মশিউর রহমান। ওই সময় সেখানে থাকা রোগীকে তিনি বলেন, তোমার সময় শেষ। তুমি বাড়ি চলে যাও। আবার কিছুদিন পরে আইসো। এ নিয়ে ডাক্তার ও রোগীদের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখি। পরে আমি নিচ থেকে ওষুধ নিয়ে এসে শুনি তারা ডাক্তারকে মারধর করেছে।’

হাসপাতালে কর্মরত ফয়সাল হোসেন বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে স্যার নামাজের উদ্দেশ্যে বাহির হচ্ছিলেন। ঠিক এমন সময় কয়েকজন ব্যাক্তি তাকে রুম থেকে বাহিরে আসতে বলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ব্যক্তি গিয়ে স্যারের মুখে ঘুষি ও শরীরে লাথি মারতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা গিয়ে সেখানে তাদেরকে আটকানোর চেষ্টা করি। কোনোভাবেই তাদেরকে থামানো যাচ্ছিল না। জরুরি বিভাগ থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালের সামনে নিয়ে ৪ থেকে ৫ জন মিলে তার গলা চেপে ধরে। আমি আটকাতে গিয়ে তাদের হামলায় আহত হয়। ‘

হাসপাতালে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার রুহুল আমিন বলেন, তারা আমাদের চিকিৎসককে মারধর করে আবার তার মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমরা যারা কর্মরত ছিলাম সকলেই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ি। এ ঘটনায় জরুরি সেবা বাদে সকল ধরণের সেবা দেড় ঘণ্টার মতো বন্ধ রাখা হয়। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ছয় মাস আগেও আমাদের আরেক স্যারের উপর হামলা হয়েছিল। তার কয়েক মাস না যেতেই আজকে আবার।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক মশিউর রহমান বলেন, উমর ফারুক ও সুখি নামের দুজন রোগী আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ১৪ দিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন। তাদের চিকিৎসা চলমান, বড় ধরণের কোনো সমস্যা নেই। আজ সকালে রাউন্ডে গিয়ে অবস্থা ভালো হওয়ায় তাদের বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলা হয়। তাদের দুজনকে ছুটি দেওয়ার কথা জানালে তারা রেগে যায় এবং খারাপ ব্যবহার করে। ছুটি নিবে না বলে জানায়। এরপর আমাকেসহ নার্সদের হুমকি দেয়।

পরবর্তীতে দুপুর ১২টার দিকে মামুন নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হুমকি দেয় তাকে ছুটি না দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি সেই রোগীকে ছুটি দিয়ে দেয়। দুপুর দেড়টার একটু পরে জরুরি বিভাগের সামনে পেয়ে মামুন ও তার সহযোগীরা আমার উপর আক্রমণ করে। তারা আমাকে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভর্তি রোগীকে ছুটি দেওয়াকে কেন্দ্র জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক মশিউর রহমানের উপর হামলা চালিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্চিত করা হয়েছে। এতে করে আমরা হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ ঘটনাকে ঘিরে সকলেই হতাশ ও ক্ষুব্ধ।

হাসপাতালে মাত্র দুজন চিকিৎসক দিয়ে উপজেলার সকল মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় এ ধরণের হীনমন্যতামূলক আচরণ ও আক্রমন কোনোভাবেই সহ্য করার মতো নয়।

অভিযোগের বিষয়ে মামুন বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে ধাক্কা দেয়, তখন এ ঘটনা ঘটে। তবে আমি তাকে মারিনি। আমার সঙ্গে লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। উনার মোবাইল ফোন ঘটনার পরপরই ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুপুরের দিকে হাসপাতাল থেকে ডাক্তার পরিচয়ে একজন ফোন করে বলেন বিষয়ট জানান। সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল টিম পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি জানালে আমি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখতে পায়


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ