গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্কুল শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে উপজেলার মোহাম্মদ মান্নান খান উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) মোহাম্মদ মান্নান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মো. সাঈদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মিয়ার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পরবর্তীতে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘গত ১ জুন আমরা কয়েকজন ছাত্রী শিক্ষক সাঈদুজ্জামানের কাছে গণিত প্রাইভেট পড়তে যাই। তিনি বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় আমাদের গণিত শেখান।
প্রাইভেট শেষে আমিসহ আরো কয়েকজন ছাত্রী চলে আসি। কিন্তু আমাদের এক সহপাঠীকে একা পেয়ে শিক্ষক সাঈদুজ্জামান তাকে যৌন হয়রানি করেন।’
একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘গণিত ক্লাসে শিক্ষক সাঈদুজ্জামান প্রায়ই আমাদের গায়ে হাত দেয়। তাকে একাধিকবার নিষেধ করার পরেও তিনি আমাদের কথা শুনেননি।
আমরা লজ্জায় কারো কাছে বলতেও পারি নাই। একইভাবে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মিয়াও কারণে-অকারণে আমাদের গায়ে হাত দিয়ে থাকেন।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মিয়া বলেন, ‘শিক্ষক সাঈদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আমি মৌখিকভাবে তাকে ছুটি দিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের সভাপতি পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ তবে নিজের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শিক্ষক সাঈদুজ্জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়টির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানার পর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইসমাইলকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক সাঈদুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মিয়ার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ থাকায় তাকেও সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর আমরা অধিকতর তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’