প্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে’ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ‘পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) রংপুরের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আঞ্চলিক সেমিনারে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
সেমিনারে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
দেশের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদেরকে তার ঘোষিত সংস্কার রোডম্যাপ টেকসই করার উপায় উদ্ভাবনের আহবান জানিয়ে সেমিনারে প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিচারিক সংস্কার শুধু বিভিন্ন খাতভিত্তিক সংস্কারের স্থায়িত্বের মূল চাবিকাঠিই নয়, বরং এটি এখন নিজেই ‘সংস্কার’ শব্দের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বিচার বিভাগ হলো রাষ্ট্রের একমাত্র অঙ্গ, যা বহু দশক ধরে নিজের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই দাবির কেন্দ্রে রয়েছে নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি নিজেরাই নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব। গত আট মাসে এই প্রচেষ্টা অভূতপূর্ব গতি অর্জন করেছে। এখন লক্ষ্য হলো সেই উদ্দেশ্য পূরণ করা এবং তা যেন ভবিষ্যতেও টিকে থাকে তা নিশ্চিত করা। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আমরা কখনো ক্ষমতার পূর্ণ পৃথকীকরণের লক্ষ্যের এতটা কাছাকাছি আসিনি। যদি এই সুযোগ কোনোভাবে নষ্ট হয়, তবে তা বিচার বিভাগের মর্যাদা, অখণ্ডতা ও প্রাসঙ্গিকতার জন্য চরম ক্ষতিকর হবে।’
পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতায় ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপকে যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আজকের সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
সেমিনারে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার আদালত ও ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও পাবলিক প্রসিকিউটরসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আমরা কখনো ক্ষমতার পূর্ণ পৃথকীকরণের লক্ষ্যের এতটা কাছাকাছি আসিনি। যদি এই সুযোগ কোনোভাবে নষ্ট হয়, তবে তা বিচার বিভাগের মর্যাদা, অখণ্ডতা ও প্রাসঙ্গিকতার জন্য চরম ক্ষতিকর হবে।