রংপুরে অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের দুটি কারণ অনুসন্ধান করেছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর। গ্যাস ট্যাংকে মজুদ করা এলপিজি সম্পূর্ণ ভাবে অপসারণ না করে লিকেজ মেরামতের কাজ করার সময় ওয়েল্ডিংয়ের আগুন এলপিজি গ্যাসের সংস্পর্শে আসায় অত্যধিক তাপ ও চাপ তৈরী হয়। তা থেকে ট্যাংক বিস্ফোরণ হতে পারে। সেই সাথে নিম্নমানের শীট ও সরঞ্জাম দিয়ে গ্যাস ট্যাংক তৈরী করার ফলে কার্যকরী চাপ তৈরীর আগেই ট্যাংক বিস্ফোরণ হতে পারে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে আইডিয়াল মোড়ের নিজ কার্যালয়ে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সহকারী পরিদর্শক অশোক কুমার দাস সাংবাদিকদের জানান, রংপুর নগরীর বাজার এলপিজি অটোগ্যাস অ্যান্ড কনভার্সন সেন্টারে গত ১৯ জুলাই দেড়টায় গ্যাসের ট্যাংক মেরামতে ওয়েল্ডিং করার সময় বিস্ফোরণঘটে ট্যাংকের মেরামতে কাজ করা সেলিম রেজা সোহাগ (৩৫) নামে এক শ্রমিক সহ ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ১৯ জুলাই ও ২০ ঘটনাস্থলে সরেজমিনে পরিদর্শনসহ আহত-প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন। মেসার্স সিও বাজার এলপিজি অটো গ্যাস অ্যান্ড কনভার্সন সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান (আরিফ) ও মো. ফারুক আহমেদ (বিপুল), সিও বাজার, সদর, রংপুর এর অনুকূলে ২০,০০০ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এলপিজি ট্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক, বাংলাদেশ এর দপ্তর হতে ১০.০৮.২০২৩ তারিখে নকশা অনুমোদন (প্রাথমিক অনুমোদন) করা হয়।
কনভার্সন সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান (আরিফ) ও মো. ফারুক আহমেদ (বিপুল), সিও বাজার, সদর, রংপুর এর অনুকূলে ২০,০০০ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এলপিজি ট্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক, বাংলাদেশ এর দপ্তর হতে ১০.০৮.২০২৩ তারিখে নকশা অনুমোদন (প্রাথমিক অনুমোদন) করা হয়।
বিস্ফোরক পরিদপ্তরের চূড়ান্ত অনুমোদন (লাইসেন্স) গ্রহণ না করেই এলপিজি গ্যাসাধার ও অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করে এ অটোগ্যাস স্টেশন থেকে এক বছর বা তার অধিক সময় ধরে যানবাহনে এলপিজি সরবরাহ করে আসছে।
উল্লেখ্য, পরবর্তীতে তৎকালীন বিস্ফোরক পরিদর্শক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ কর্তৃক ১৯.০৯.২০২৪ তারিখে পরিদর্শনে দৃষ্ট ত্রুটি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অনুমোদন ও চুক্তিপত্র দাখিল না করায় এ দপ্তর হতে চূড়ান্ত অনুমোদন তথা লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয়নি। ১৯.০৭.২০২৫ তারিখে সৃষ্ট দুর্ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ আগে পাইপ লাইন এবং গ্যাসাধারে লিকেজ হওয়ার কারণে গ্যাসাধার হতে এলপিজি বেরিয়ে যায়। দূর্ঘটনার দিন লিকেজ ওয়েল্ডিং করা হয় এবং পরীক্ষার জন্য গ্যাসাধারে বায়ু মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এর কিছু সময় পরে গ্যাসাধার বিস্ফোরিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে, ইতিপূর্বে গ্যাসাধারে মজুদকৃত এলপিজি সম্পূর্ণরুপে অপসারণ না করে গ্যাসাধারে লিকেজ মেরামতের কাজ (ওয়েল্ডিং) করায় গ্যাসাধারে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। অথবা, নিম্নমানের শীট ও সরঞ্জামে গ্যাসাধার তৈরির ফলে প্রযুক্ত কাযকরী চাপ প্রয়োগের পূর্বেই গ্যাসাধারে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।