শিরোনাম
জামায়াতে ইসলামী ইসলামের নামে মানুষের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে: তাহের সুমন খানসামায় একই পরিবারে দুই প্রতিবন্ধী; বৃদ্ধ বাবা-মায়ের মানবেতর জীবন ফিরে দেখা ২ আগষ্ট; রংপুরে আন্দোলনে একসাথে নেমেছিলেন শিক্ষক-অভিভাবকেরা লন্ডনে লোকাল বাসের সাধারণ যাত্রী তারেক রহমান, নেটদুনিয়ায় প্রশংসিত সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি; চাঁদার টাকায় কেনা অপুর মোটরসাইকেল উদ্ধার প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা বিএনপি নেতা পঞ্চগড়ে ৯ জনকে পুশ ইন করল বিএসএফ ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষিত হবে জুলাই ঘোষণাপত্র : মাহফুজ প্রয়োজনে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করবে বিএনপি: মির্জা আব্বাস
শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪১ অপরাহ্ন

সান্ডা থেকে গাধা : মানুষের তামাশায় প্রাণীরাও আজ নিরাপদ নয়!

মো:ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ / ৪৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

সান্ডা বা প্যাঙ্গোলিন এক প্রকার নিশাচর স্তন্যপায়ী প্রাণী, যার শরীর ঢেকে থাকে শক্ত আঁশে- যা তৈরি কেরাটিন দিয়ে, যেমন মানুষের নখ বা চুল। সে ভয় পেলে নিজেকে বলের মতো গুটিয়ে ফেলে। অথচ এই স্বাভাবিক আচরণই হয়ে উঠেছে ট্রলের খোরাক।

এই নিরীহ ও আত্মরক্ষামূলক স্বভাবের প্রাণীটি যখন সামাজিক ট্রলের শিকার হয়, তখন তা শুধু একটি প্রাণীর অপমান নয়, বরং আমাদের সংবেদনশীলতারও পরাজয়। এমন একটি শান্তিপ্রিয় প্রাণীকেও যদি আমরা কৌতুকের খোরাক বানাই, তবে প্রশ্ন জাগে- আমাদের রসবোধ কতটা বিকৃত হয়ে গেছে?

২০২৫ সালের মে মাসে সিলেটে সান্ডার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এই ভিডিওটিই রূপ নেয় যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ট্রল, বিকৃত ক্যাপশন আর কুরুচিকর কনটেন্টের ঢেউয়ে। এক শ্রেণির মানুষ সেখানে খুঁজে নেয় বিকৃত আনন্দ- যেখানে কোনো যৌন প্রতীক নেই, তবুও তার শরীরকে বানিয়ে ফেলা হয় কল্পনার যৌনতাব্যঞ্জক রসিকতার বিষয়।

এই ট্রলের নেপথ্যে আছে বিকৃত মানসিকতা। ইন্টারনেটকে ‘নির্দ্বিধা আনন্দের মাঠ’ ভাবা এক শ্রেণির মানুষ মনে করে- তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। এই প্রবণতা আসলে নিঃসঙ্গতা, রসবোধের অবক্ষয় এবং সহানুভূতির ঘাটতির বহিঃপ্রকাশ।

আমরা কি এতটাই নীচে নেমে গেছি যে, একটি নিরীহ প্রাণীকেও বিকৃত রসিকতার পাত্র করে তুলছি? এক প্রাণীর অস্বাভাবিক গঠন বা আচরণ কি শুধুই হাস্যরসের জন্য ব্যবহারযোগ্য?

সান্ডা আজ শুধুই একটি প্রাণীর নাম নয়। সে আমাদের বিবেকের আয়নায় এক কদর্য চেহারা দেখায়- যেখানে বিকৃত রসবোধ, যৌন সংকেতের অতিরঞ্জন এবং সামাজিক অবক্ষয়ের ছাপ স্পষ্ট।

প্রাণীদের নিয়ে কৌতুক থামানো যাবে না, কিন্তু তার রুচি, মাত্রা ও উদ্দেশ্য বিবেচনা করা জরুরি। কারণ আমরা কাকে হাস্যকর বানাচ্ছি, আর কেন তা করছি- সে প্রশ্নেই লুকিয়ে আছে আমাদের সমাজের মানবিকতা।

সান্ডা থেকে গাধা- সব প্রাণীই আমাদের মতোই এই পৃথিবীর বাসিন্দা। আজ আমরা যদি তাদের নিয়ে কৌতুকের নামে কুরুচির সীমানা ছাড়িয়ে যাই, তবে কাল আমরা নিজেদেরই ছোট করব।

একটি প্রশ্ন তাই থেকে যায়- আমরা কি এখনো সভ্য সমাজে বাস করছি, নাকি তামাশার এক নির্মম যুগে?


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ