নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা পরিচয়ে রোদোয়ান হাসান রাতুল নামে ছাত্রলীগের সমর্থককে আটকের পর মারধর করে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে চাঁদা আদায় করার পর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। সমন্বয়ক পরিচয়ে যারা চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এনসিপির আলোচিত নেতা সারোয়ার তুষারের সহযোগী বলে স্থানীয়রা জানায়।
সম্প্রতি চাঁদা আদায়ের একটি ভিডিও ও তুষারের সঙ্গে জুলাই পদযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রচারণা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় তুষারের সঙ্গে চাঁদাবাজদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রাতুল সদর উপজেলার পাইকারচর এলাকার মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বর্তমানে এনসিপি নেতা শাকিল, মারুফ, আয়ান, রিফাত, মাহফুজসহ কয়েকজন মিলে বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মব সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি করছে। এমনকি যাদের কোনো দলীয় পদ-পদবি নেই, হয়তো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছবি আছে এমন সব মানুষকে আটকিয়ে আওয়ামী লীগের ট্যাগ দিয়ে চাঁদা আদায় করছে।
গত রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগের সমর্থক হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত রেদোয়ান হাসান রাতুল নামের একজনকে মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাস থেকে নামিয়ে তাকে প্রচণ্ড মারধর করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শাকিল, মারুফ, আয়ান, রিফাত, মাহফুজসহ কয়েকজন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে।
পরে তার চাচা সিরাজ উদ্দিনের কাছ থেকে চাঁদার টাকা আদায়ের পর মাধবদী থানা পুলিশকে খবর দিয়ে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ তাকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
সমন্বয়ক পরিচয়ে যারা চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটিয়েছে এদের মধ্যে শাকিল ও মারুফের নেতৃত্বে জুলাই পদযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের। সম্প্রতি চাঁদা আদায়ের একটি ভিডিও ও তুষারের সঙ্গে চাঁদাবাজ শাকিল এবং মারুফের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ ব্যাপারে শাকিল ও মারুফের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমি মাধবদী কিংবা নরসিংদীতে গেলে অনেকেই যোগাযোগ করে। সবাইকে তো বাইনেমে চিনি না কিংবা তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করার সুযোগ থাকে না।
আমি বিষয়টা শুনেছি। তারা (অভিযুক্ত শাকিল, মারুফ) আমাকে বললো, মাহফুজ নামের একজন তাদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এখন তাদের তো কোন পদ-পদবি নেই। ব্যবস্থা কি নেন?’
এ ব্যাপারে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া রেদোয়ান হাসান রাতুল সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার ৮ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি। তাকে আটক করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা ফোন দিয়েছিল। আমরা গিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছি। আগে-পরের ঘটনা জানা নেই। তবে মৌখিকভাবে চাঁদাবাজির কথা শুনেছি।’