অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সংস্কারের ‘কলা’ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীতে দুপুরে কৃষকদলের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, সংস্কার নিয়ে যেগুলো আলোচনা হয়েছে সেগুলো কম্পাইল করে জাতির কাছে প্রকাশ করেন। আগামী ২ জুন আবার ডেকেছেন আমাদের প্রধান উপদেষ্টা। ভাবটা আমরা বুঝছি এরকম আনুষ্ঠানিকতা-আয়োজনের কোনো কমতি নেই। কিন্তু কাজের কাজের কোনো খবর নেই। আবার ডেকেছেন ২ তারিখে তৃতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। কেনো? উদ্বোধন কয়বার করতে হয়। এই সংস্কার নিয়ে আর কতবার উদ্বোধন করবেন? প্রথম পর্যায়ে একবার উদ্বোধন করেছেন আলোচনার, দ্বিতীয় পর্যায়ের আবার উদ্বোধন করলেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আবার আপনারা এটা একত্রিত করলেন… এভাবে আপনারা আমাদেরকে সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংস্কার আমাদের প্রধান অ্যাজেন্ডা তবে তার চাইতেও বেশি ফ্যাসিস্টদের বিচার। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল সবাইকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসতে হবে, এটা আমাদের সর্বোচ্চ অ্যাজেন্ডা। কিন্তু নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষকে এই ডিসেম্বরের মধ্যে দেবেন বলে আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) আশ্বস্ত করেছিলেন আমাদের সামনে… পরবর্তীতে আপনি সরে গেলেন সেই কাজটি ঠিক করেননি।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যই তো, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তো, বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠান জন্য তো, একটি শক্তিশালী সাংবিধানিক রাষ্ট্র পাওয়ার জন্যই তো, আমরা আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্যই তো, আমরা রক্ত দিয়েছি, সংগ্রাম করেছি, অবিরাম আমরা নির্যাতিত হয়েছি, কারাবাসে গিয়েছি, আয়না ঘরে গিয়েছি কীসের জন্য? এই অধিকার আদায়ের জন্যই তো। আর সেই অধিকার আদায়ের কথা বললেই যদি আপনারা নারাজ হন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেটা খুব দুঃখনজনক। সংস্কারের কথা বলে আর কত বিলম্ব করবেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া একটিও কারণ নাই, আপনার সামনে যুক্তি নাই। কেনো আপনি ডিসেম্বরের বাইরে গিয়ে নির্বাচন দেবেন, সেটার পক্ষে একটিও যুক্ত নাই। কিন্তু শুধু বলেন, ডিসেম্বর থেকে জুন, ডিসেম্বর থেকে জুন যেন আছর করেছেন আপনারা যে, ‘ডিসেম্বর থেকে জুন’ এটা বলতে থাকতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে দেশের মানুষের দাবি। একটি কারণও নাই ডিসেম্বরের বাইরে নির্বাচন যাওয়ার। সাংবাদিক বন্ধুদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা জাতির সামনে উন্মুক্ত করবে যে, যদি ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে একটি যুক্তিও তাদের কাছে থাকে তার সেটা যেন তারা প্রকাশ করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলতে চাই, সংস্কার এবং নির্বাচন চলমান প্রক্রিয়া। যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসুক তারা প্রতিশ্রুত সেই সংস্কার এবং বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাবে। বিচার এটা বিভাগের স্বাধীন এখতিয়ার। এটা তারা তাদের মতো স্বাধীনভাবে বিচার পরিচালনা করবে। আমরা শুধু সহায়তা করব। আর সংস্কার এটা কখনও শেষ হয় না… এটা পৃথিবী যতদিন থাকবে, দেশ যত দিন থাকবে, মানব যতদিন থাকবে ততদিন তাদের চাহিদা অনুসারে, দেশের চাহিদা অনুসারে সংস্কার হতেই থাকবে, এটা চলমান প্রক্রিয়া। আর ওনার ভাষ্য, সংস্কার সমাপ্ত করেই নির্বাচন হতে হবে… কেনো?
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা হলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে কৃষি বিপ্লবে জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।