কিশোরগঞ্জে অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি সুস্বাদু পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা চাষে ঝুঁকেছেন চাষিরা। এখন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। তবে অন্যান্য ফল ও ফসলের দাম কমে যাওয়ায় এবং খরচ বেড়ে যাওয়ায় মাল্টার দিকে ঝুঁকেছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, নতুন জাতের ফল ও ফসলের প্রতি সবারই আগ্রহ থাকে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী বলে মনে করছেন চাষিরা।
উপজেলার কিশোরগঞ্জ(সদর)ইউনিয়নের কেশবা ওয়ার্ডের মাস্টার পাড়া গ্রামের ছোহরাব আলী শাহের ছেলে নুর মোহাম্মদ সোনা(৩৩)।ব্যবসার পাশাপাশি মালটা চাষ শুরু করেন ২০২০ সালের জুন মাসে ১৫০ শতক জমির উপরে যা পুটিমারী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের একটু পিছনে দৃশ্যমান।
সরেজমিনে সোনা মিয়ার কাছে জানা যায়,শুরু করেন ১০০০ চারা দিয়ে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত চারা কেনা ছিল এর মধ্যে ২০০ চারা নষ্ট হয়ে ৮০০ চারায় প্রথম বছরে সল্প পরিসরে ফল আসতে থাকে দ্বিতীয় বছর থেকে সম্পূর্ণ ফল আসতে থাকে সে বছর ৫০০০০ হাজার টাকা মালটা বিক্রি হয়,তৃতীয় বছরে ১০০০০০ লক্ষ টাকা প্রায় আসে, গত বছরে ৭৫০০০০ লক্ষ টাকা সর্বচ্চো বিক্রি করেন বলে তিনি জানান,ফল হয়েছিল ১২ টন প্রতিমন মালটা ২২০০ থেকে ৩২০০ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন,খরচ বিষয়ে বলেন রাসায়নিক সার,কিটনাশক লেবার সহ ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার মত হবে।
ফুল ফল পরিচর্যা বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন,মালটা গাছে ফুল আসে ফেব্রুয়ারি মাসে সময় ভেদে স্প্রে,কিটনাশক,সার আর ২ মাস পর পর নিরিয়ানি দিতে হয় তাতে ৪০/৫০ জন শ্রমিক যায় এক্ষেত্রে নারী শ্রমিক দিয়ে কাজ করলে অল্প টাকায় হয়ে যায়।
সঠিক ভাবে পরিচর্যা না হলে গাছের কান্ড নষ্ট হয়ে ফল ঝরে যায়।
মালটার রোগ বিষয়ে বলেন,প্রধান রোগ ডাইবেট আগাল শুকিয়ে আসে, আর একটি ভয়াবহরোগ হচ্ছে বেজিন দ্বানা, ছএাক জনিত রোগ প্রাথমিক পযার্য়ে চিকিৎসা না দিলে সব গাছে ধরে গাছ নষ্ট করে দেয়, ঘন বৃষ্টির কারণে অ্যানথ্রাক্স রোগ আসে কালো কালো দাগ হবে। সময় মত সার,কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করলে এ সকল রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
সাধারণের উদ্দেশ্যে সোনা মিয়া বলেন,চারা নির্বাচন ভালো না হলে লস হবে,ভালো চারার মধ্যে জাম্বুরা গ্রাফটিং, বাড়ি-১,আফ্রিকান ও ভিয়েতনাম মালটা চারা আছে এবং নতুন জাত ও চলে আসছে এক্ষেত্রে হর্টিকালচার সেন্টার ও স্হানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ নিলে ভাল হবে।
এদিকে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পশ্চিম পাড়ার নছিমুদ্দিনের ছেলে সেনা অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ফজলুল হক বাড়ির পাশে ৩০ শতক জমিতে ৭ বছর আগে মালটা চাষ শুরু করেন সে সময়ে ১০০ টাকা হারে ২০০ পিচ মালটা গাছ ক্রয়ে চাষ শুরু করে বছরে পর্যায়ক্রমে লাভের হার বৃদ্ধি পেতে থাকেন গত বছরে খরচ ও আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ১ লক্ষ টাকা মুনাফা পান বলে তিনি জানান।সঠিক ভাবে করলে লস নেই আর সাথে সাথী ফসলও করা যায়।আমি মালটা বাগানের সাথে আদা,পেপে,কমলা,আম, ড্রাগন,বড়াই করছি কোন সমস্যা নেই। পরিচর্যা ঠিকভাবে করলেই যথেষ্ট।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান হোসেন বলেন,কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রায় ৩২ হেক্টর জমিতে মালটা বাগানের চাষ হচ্ছে।বর্তমানে সবুজ মালটা বাড়ি-১ চাষ হচ্ছে। আমাদের এই উপজেলায় মালটা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
মালটার রোগ বিষয়ে বলেন,পাতা শোধন একটি পোকা রয়েছে এই পোকার আক্রমণ বেশি হয়,কিছু কিছু ক্ষেএে ডাইবেট রোগ দেখা দেয় আমরা এজন্য নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করি বিভিন্ন বাগান ভিজিট করেছি,কৃষকরা মালটা চাষে লাভবান হচ্ছেন।