রংপুর মহানগরীর সেনপাড়ার বাসিন্দা জাহিদা খাতুন। গত বছর মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে ভুগেছেন এই গৃহবধূ। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বরের কষ্ট কী জিনিস বুঝেছি। এ জ্বরে আক্রান্ত হলে কেউ বাঁচে, কেউ মারা যায়। আমরা ট্যাক্স, ভ্যাট দেই, কিন্তু মশা তাড়াতে সিটি করপোরেশনের কোনো কার্যক্রম দেখি না। দিনে-রাতে সমান তালে মশা কামড়ায়। কয়েল জ্বালিয়ে কিংবা স্প্রে করেও কাজ হচ্ছে না।’
শুধু জাহিদা খাতুন নয়, এমন অভিযোগ পুরো মহানগরবাসীর। তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, মশকনিধনের লক্ষ্যে ওয়ার্ডগুলোতে কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, নগরীতে চলতি বছর এখন পর্যন্ত পাঁচজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। রংপুরের সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা বলেন, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে পাঁচজন। মশকনিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন থাকতে হবে। আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মশকনিধনে সিটি করপোরেশন ব্যয় করেছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর চলতি অর্থবছরে এ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। তারপরও মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
নগরবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নগরীর খাল ও ড্রেন পরিষ্কার না করায় সেগুলো ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রজনন বাড়ছে মশাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গের। নগরীর কেরানীপাড়ার দুলাল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, ‘রংপুরের প্রাণ শ্যামাসুন্দরী খাল। কিন্তু এটা আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মশা-মাছির কারখানায় পরিণত হয়েছে।’
সরেজমিন শ্যামাসুন্দরী খালপাড় গোমস্তাপাড়ায় দেখা গেছে, মশার হুল থেকে রক্ষায় দিনেও টানানো মশারি। অনেক বাড়িতে বন্ধ রাখা হচ্ছে দরজা-জানালা। বাসিন্দারা বলছেন, মশার উপদ্রবে মশারি টানিয়ে, স্প্রে করে ও কয়েল জ্বালিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না।
তবে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগার মেশিন ও স্প্রে দিয়ে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তবে জনবল, মেশিন ও ওষুধস্বল্পতার কারণে একটু ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে।
সূএ : আজকের পত্রিকা