রংপুর বিভাগে সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে বাল্যবিয়ে। জাতীয়ভাবে বাল্য বিয়ের হার শতকরা ৫০ ভাগ হলেও রংপুর বিভাগে এ হার শতকরা ৬৮ ভাগ। এর মধ্যে শতকরা ৫৪ ভাগ কিশোরীর বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগে এবং শতকরা ২৫ ভাগের হয় ১৬ বছরের আগে। বাল্যবিয়ের হার শহরাঞ্চলে ৪০ ভাগ হলেও গ্রামাঞ্চলে এটি শতকরা ৫৬ ভাগ।
সোমবার (২ জুন) রংপুর নগরীর আরডিআরএস বাংলাদেশ ভবনের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে জেলা পর্যায়ে ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গণমাধ্যম প্রচারণা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির অর্থায়নে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় এবং আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত ‘জননী প্রকল্প’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জনসচেতনতামূলক এ অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর প্রভাব, কিশোরীদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি পরিবার ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে কিশোরীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণে উৎসাহিত করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়। মূলত বাল্যবিবাহ নিরুৎসাহিত করা এবং এর কারণে অল্প বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে এই ক্যাম্পেইন ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. রুহুল আমিন, পরিবার-পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর রংপুরের উপ-পরিচালক সেলোয়ারা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদীন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা মনসুর আলম খান, ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক মো. আল-আমিন, ইমাম সমিতির রংপুর জেলা সভাপতি আজগর আলীসহ অন্যরা। বক্তারা সংশ্লিষ্ট সকলকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বাল্যবিবাহের কুফল, এটি প্রতিরোধে সরকার এবং জননী প্রকল্পের বহুমুখী কার্যক্রম ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা কিশোর-কিশোরীদের স্বপ্ন পূরণে সহায়ক পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তা এবং স্কুল ঝরে পড়ার ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।