শিরোনাম
দেবীগঞ্জে ট্রাক চাপায় স্কুল শিক্ষার্থীসহ দুই জনের মৃত্যু গাইবান্ধায় ইয়াবাসহ মাদক কারবারি আটক রংপুরে পরীক্ষায় নকল: ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর রংপুর সিটি করপোরেশনে মশকনিধনে দেড় কোটি টাকা, তারপরও বাড়ছে উপদ্রব এবার ভারতের ১৫ শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশে থাকবে চীন’ চার নেতা ও গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থার প্রেক্ষিতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেবীগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে দোকানে হামলা, ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতাসহ আহত ৩ লাইভে গুলি করতে প্ররোচনার ঘটনায় বেরোবির প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন

রংপুরে ৩৭ মডেল মসজিদে বকেয়া পৌনে ২ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল

রফিকুল ইসলাম, রংপুর / ২৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

রংপুর বিভাগের আট জেলার ৪৫টি মডেল মসজিদের মধ্যে ৩৭টিতে বকেয়া ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার ৯৯৯ টাকার বিদ্যুৎ বিল। এই বিল নিয়ে মসজিদ ও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ উভয়ই বিপাকে পড়েছে। এ অবস্থায় বিল আদায় নিয়ে কোন পথে এগোবে, সেটিও ভেবে পাচ্ছে না কেউ। বকেয়া বিল আদায়ে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় ও আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে একাধিকবার উত্থাপিত হলেও সমস্যা সমাধান হয়নি।

বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮৩ টাকা মোট বকেয়া বিলের মধ্যে ১২টি মসজিদ কমিটি বিল পরিশোধ করেছে ৮ লাখ ৫০ হাজার ৯১ টাকা। বাকি পুরো টাকা বকেয়া রয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই বিল হিসাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, মডেল মসজিদগুলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বেতন দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু মডেল মসজিদ পরিচালনার নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ মানুষের দানের টাকা থেকে মসজিদ কর্তৃপক্ষকেই নির্বাহ করতে হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ বিল পরিশোধের জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে। এ নিয়ে বিপাকে আছে মসজিদ কমিটি।

মডেল মসজিদের দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মাসে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল আসে। সেই পরিমাণ টাকা দান বাক্সে জমে না। বিদ্যুৎ বিল ছাড়াও মসজিদের অন্যান্য কাজের টাকাও মানুষের দান করা টাকা থেকে ব্যয় করতে হয়। তবে, মডেল মসজিদগুলোতে বাণিজ্যিক বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার কারণে বিল আরো বেশি আসছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রকল্পের খরচ ধরা হয় আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা।

প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী, মডেল মসজিদের জন্য ৪০ শতাংশ জায়গার প্রয়োজন। জেলা পর্যায়ে চারতলা ও উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলা হয়।

মডেল মসজিদে নারী-পুরুষের পৃথক অজু ও নামাজের স্থান, পাঠাগার, গবেষণাকেন্দ্র, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, পর্যটকদের আবাসন ব্যবস্থা, দাওয়াতি কার্যক্রম, হিফজ মাদরাসা, মক্তব, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থা, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসন প্রকল্পসহ বহুমুখী ইসলামি কার্যক্রম ও সেবার কথা বলা আছে।

দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, মসজিদের নিজস্ব কোনো আয়ের ব্যবস্থা নেই, মানুষের দানের টাকা থেকে ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। মসজিদগুলোতে প্রতি ওয়াক্তে নামাজের জন্য সাধারণত যারা আসেন, প্রতিনিয়ত তারাই দান করেন। মসজিদে বেশি মানুষ সমাগম না হলে দানের টাকাও বাড়ে না। দানের টাকা কম হওয়ায় বিদ্যুৎ বিল দেওয়া ও অন্যান্য খরচ মেটাতে সমস্যা হচ্ছে।

জানা গেছে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৪৫টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছে। নিয়মিত নামাজ শুরু হয়েছে ৩৮টিতে। এই ৩৮টির মধ্যে ৩৭টি মসজিদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৩ হাজার ৯৯৯ টাকা।

রংপুরের একটি মডেল মসজিদের ইমাম নাম প্রকাশ না করে বলেন, মসজিদে প্রতি ওয়াক্ত কমবেশি নামাজি আসেন। মাসে গড়ে ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকা নামাজিদের কাছ থেকে সংগ্রহ হয়। আর মসজিদে প্রতি মাসে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। তবে, বেশ কিছু মসজিদ শহরের অদূরে নির্মাণ করায় মুসল্লির সংখ্যা কম হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। শহর কেন্দ্রিক মুসল্লি বেশি হলেও খরচ বেশি কিন্তু দানের টাকা সেই পরিমাণ ওঠে না। প্রায় প্রতিটি মসজিদে শুক্রবার নামাজের সময় মুসল্লিদের দানের বিষয়ে অনুরোধ করা হয়। তাতেও সংকট কমছে না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল হামিদ বলেন, ‘মডেল মসজিদগুলোতে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ বাড়ছে এটা ঠিক। কিন্তু এসব পরিশোধ করার কোনো অর্থ কেন্দ্রীয়ভাবে বরাদ্দ নেই। আমরা খুব কম বরাদ্দের জন্য চেষ্টা করছি, কবে পাব জানি না। এসব মসজিদে জেলার সভাপতি ডিসি, উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও। স্থানীয়ভাবে দান ও অন্যান্য সহযোগিতায় বিল পরিশোধ করতে হবে।’

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি রংপুর বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘আমরা তো মডেল মসজিদের ঠিকমত বিদ্যুৎ বিল পাই না। অনেক টাকা বাকি আছে। আমরা মডেল মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়ে তাগাদা দিচ্ছি কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। মডেল মসজিদ কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে। আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে তো বিল দিতে হবে। আমরা তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।’

সূএ : কালের কণ্ঠ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ