রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে তিনটি ব্যাংকের নিরাপত্তা গার্ডের কাছ থেকে ভুয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সসহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার এবং একজন পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার মোবাইল-১ টিম শহরের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক ও ডাচ্ বাংলা ব্যাংক পিএলসি, রংপুর শাখার নিরাপত্তা গার্ডদের অস্ত্র ও লাইসেন্স যাচাই করে। এ সময় লাইসেন্সের তথ্যে গড়মিল পাওয়ায় সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫ রাউন্ড গুলি ও তিনটি ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মোঃ শাহাদাৎ হোসেন (২৬), মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, রংপুর শাখার নিরাপত্তা গার্ড। তার কাছ থেকে একটি ১২ বোরের দোনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও একটি কথিত ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়।মোঃ জহুরুল হক (২৭), যমুনা ব্যাংক পিএলসি, রংপুর শাখার নিরাপত্তা গার্ড। তার কাছ থেকে একটি ১২ বোরের একনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও একটি কথিত ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, পলাতক রয়েছেন ডাচ্ বাংলা ব্যাংক পিএলসি, রংপুর শাখার নিরাপত্তা গার্ড মোঃ মোশফেকুর রহমান (৪১)। তার ব্যবহৃত একটি একনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও একটি কথিত ভুয়া লাইসেন্স ব্যাংক ম্যানেজারের জিম্মায় থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত দুই নিরাপত্তা গার্ডের সঙ্গে প্রতারণা করে স্থানীয় রেজ্জাকুল ইসলাম তুহিন নামের এক ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে ২-৪ লাখ টাকা করে আদায় করেন। তুহিনের মাধ্যমে রংপুরের মুলাটোল এলাকার আনোয়ার হোসেন বাবুর বাড়িতে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়। পরে এলিট ফোর্স নামক সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুইজনকে ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তাদের প্রদানকৃত লাইসেন্সের বিষয়ে জেলা প্রশাসক রংপুর ও পঞ্চগড় অফিসে যাচাই করে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরের কোনো লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন হয়নি। ফলে এটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়।
ঘটনার পর কোতয়ালী থানার অস্ত্র উদ্ধারকারী এসআই (নিঃ) মাহফুজার রহমান বাদী হয়ে পেনাল কোড ও অস্ত্র আইনের বিভিন্ন ধারায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত দুইজন ছাড়াও পলাতক মোশফেকুর রহমান ও প্রতারণার মূলহোতা তুহিন এবং আনোয়ার হোসেন বাবুকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, এ ধরনের প্রতারণা ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। পলাতকদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।