শিরোনাম
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

রংপুরে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু, প্রস্তুত আইসোলেশন ওয়ার্ড

ডেস্ক রিপোর্ট / ১৪ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

রংপুর ও দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) থেকে এই দুটি হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রে জানা গেছে, এই দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে ৪০০ করে মোট ৮০০টি করোনা শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ করা হয়েছে। ধাপে ধাপে বিভাগের অন্যান্য হাসপাতালেও পরীক্ষার ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আরটি-পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে নমুনা বিশ্লেষণ চালু হয়নি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক ওয়াজেদ আলী বলেন, আরটি-পিসিআর চালু করতে আরও কিছু সময় লাগবে। তবে কিটের মেয়াদ ও সরবরাহ সীমিত হওয়ায় ঢাকা থেকে অগ্রাধিকারে প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করছে।

তিনি আরও বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের পিসিআর মেশিন এখনো ক্যালিব্রেটেড নয়, সে কারণে সেখানে এখনো পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়নি। মেশিনটি ক্যালিব্রেটেড হলে সেখানেও পূর্ণমাত্রায় পরীক্ষা চালু হবে। এটি টেকনিক্যাল বিষয়, তাই কবে নাগাদ চালু হবে, তা তিনি বলতে পারেননি।

ওয়াজেদ আলী বলেন, ভেতরে-ভেতরে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতা রয়েছে। এখন পর্যন্ত রংপুর বিভাগে কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। রংপুর কেন, সারা দেশে খুব বেশি পজিটিভ নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরীক্ষার আওতা বাড়ানো গেলে দ্রুত সংক্রমণ শনাক্ত ও প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। এ জন্য স্থানীয় হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

একই কথা জানান রংপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা। তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়লেও জনগণকে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। আক্রান্ত রোগীর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। আমরা আগেও করোনা মোকাবিলা করেছি। এবারও পারব। শুধু সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অপ্রয়োজনে ভিড় এড়িয়ে চলা ও সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চলছে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর থেকে রংপুর বিভাগে করোনা সংক্রমণের হার শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে থাকে। প্রায় তিন বছর ধরে এই অঞ্চলে করোনা শনাক্তের হার শূন্যের কোঠায় রয়েছে।

বিগত সময়ে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৪ হাজার ৮৯৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৬৩ হাজার ৪৯৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯১ জনের। রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ ৩৪১ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে রংপুর জেলায়।

এদিকে রংপুরে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে এ সংক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে মেডিসিন ও শিশু বিভাগে ভিড় ক্রমশ বাড়ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মেডিসিন ওয়ার্ডের দুটি পুরুষ বিভাগে মোট শয্যা সংখ্যা ১১০টি এবং শিশু বিভাগে দুটি ওয়ার্ডে মোট শয্যা সংখ্যা ৮০টির বিপরীতে রোগী রয়েছে প্রায় দ্বিগুণ করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশির রোগী।

সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ