শিশু মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরে আরোগ্য ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশু নেতৃত্ব দেন। এসময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আখতারুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা।
অভিযানে আরোগ্য ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, ২০ শয্যার অনুমোদন নিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শয্যায় চিকিৎসা চালানো, অপরিষ্কার অপারেশন থিয়েটার, অপারেশন থিয়েটারে জরুরি ওষুধপত্র ও যন্ত্রাংশ না থাকাসহ নানা অভিযোগে অপারেশন থিয়েটারটি সিলগালা করা হয়। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশু বলেন, আমরা অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ ক্লিনিকে কোনো অপারেশন হবে না। সেই সাথে অনিয়মের অভিযোগে কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেছি। এখানে কোনো প্রকার লাইসেন্স পাইনি। ওটি অপরিষ্কার, প্রোপার ড্রাগ নেই ও নানা অব্যবস্থাপনা রয়েছে। অপারেশনের সময় চিকিৎসকের কোনো সহকারী ছিল না। এখানে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, লেবার ওয়ার্ড নেই।
তিনি আরও বলেন, যে শিশুটির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে তার ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। অপারেশন ও এনেসথেশিয়া যে চিকিৎসক করেছে আমরা তার পরিচয় জানতে পেরেছি। তাদের চিঠি দেওয়া হবে, দোষ পরিলক্ষিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দাখিল করবো।
জানা যায়, গত ৪ জুলাই নগরীর বাস টার্মিনাল রোডে আরোগ্য ক্লিনিকে অপারেশনের জন্য ভর্তি হন বদরগঞ্জ লালদিঘীর জমির উদ্দিনের মেয়ে জুঁই মনি (১২)। মঙ্গলবার রাতে অপারেশনের সময় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা রাস্তায় লাশ রেখে আহাজারি করছে এমন খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিহতের পরিবারকে ম্যানেজ করলে তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে যায়। এ নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ না দেওয়ায় পুলিশ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।