পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে এসিড দিয়ে মুখমণ্ডল বিকৃত করার অভিযোগে মিঠু ইসলাম নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার হাজিপ্রধানপাড়া মোস্তফাপুর এলাকা থেকে মিঠু ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভুক্তভোগী মোছাঃ লিমা আক্তার (১৯) তার স্বামীকে প্রধান আসামি করে শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের নাম উল্লেখসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে লিমার বিয়ে হয় মিঠু ইসলামের সঙ্গে। বিয়ের সময় নগদ চার লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় এবং নানা অজুহাতে লিমাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকায় দুই মাস আগে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। পরে স্বামী মিঠু আর নির্যাতন করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে আবার শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান। কিন্তু ফিরে যাওয়ার পর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, গত ২ আগস্ট রাতে মিঠু ইসলাম, শ্বশুর মফিজুল ইসলাম, শাশুড়ি রুবি বেগম ও ননদ বিউটি আক্তার মিলে লিমাকে লোহার রড দিয়ে পেটান এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে মিঠু নতুন একটি ভ্যাসলিনের কৌটা এনে দেন। সামান্য ঠোঁটে লাগাতেই তীব্র জ্বালা ও ক্ষত হতে শুরু করে। ভুক্তভোগী লিমার দাবি, পরিকল্পিতভাবে ওই ভ্যাসলিনে এসিড মিশিয়ে পুরো মুখ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনার পর মিঠু দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরদিন সকালে লিমা বাবার বাড়ি ফিরে আসেন। স্থানীয় চিকিৎসকের প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে ৪ আগস্ট বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার দুপুরে তিনি ছাড়পত্র পান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, লিমার মুখের ক্ষত কেমিক্যাল রিঅ্যাকশনের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, শুক্রবার রাতে মামলার প্রধান আসামি মিঠু ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে শনিবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।