শিরোনাম
ডেঙ্গুতে রংপুরে ৩ জনসহ একদিনে আরও ৪২০ জন হাসপাতালে ভর্তি, একজনের মৃত্যু বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেননি কণ্ঠশিল্পী মনিরখান, ফেসবুকে অপপ্রচার চিলমারীতে বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন পঞ্চগড়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশ সদস্যসহ আটক ২ নিজের হোটেলকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জামায়াতকর্মীর বিরুদ্ধে হামলার ভয়ে হেলমেটে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে ঘুরছেন যুবক ২০ মাসের শিশু মাসুমকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে মায়ের আর্তনাত  শাপলা’ পেতে বাধা দিলে রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে নামবে এনসিপি ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার: সেনাবাহিনী কী কী ক্ষমতা পাচ্ছেন? কুড়িগ্রাম সীমান্তে দালালের সাহায্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে লোকেরা।
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন

যুবলীগ সন্ত্রাসীর বিলাসী গাড়ি এখন বিএনপি নেতার কবজায়

ডেস্ক রিপোর্ট / ৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের উপ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। গুরুত্ব বিবেচনায় পদটি বড় না হলেও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র গ্রুপটিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। শেখ রেহানার প্রতিনিধি হিসেবে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন রেলওয়ের সব ঠিকাদারি কাজ। ক্ষমতায় থাকতে বাবর চলতেন মাফিয়াদের মতো। একাধিক বিলাসী গাড়িতে করে মহড়া দিতেন, আগে-পিছে থাকত সশস্ত্র প্রহরা। জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাবর। পুলিশের সঙ্গে একাট্টা হয়ে হামলা চালান শিক্ষার্থীদের ওপর। পুলিশের পাশাপাশি বাবর বাহিনীর হামলায় চট্টগ্রামে নিহত হন পথচারী, শিক্ষার্থীসহ অন্তত পাঁচজন।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাড়ি-গাড়ি-সাম্রাজ্য ফেলে নিরুদ্দেশ হন যুবলীগ সন্ত্রাসী বাবর।

সেই থেকে বাবরের একাধিক বিলাসী গাড়ির খোঁজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা তেমন কিছু উদ্ধার করতে না পারলেও এক বছরের মথায় আড়াই কোটি টাকা দামের ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো (ঢাকা মেট্রো ঘ ১২-৩৯-৬৯) গাড়ির সন্ধান পেয়েছে আমার দেশ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিলাসবহুল গাড়িটি এখন ব্যবহার করছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও আগামী নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া থেকে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী কুতুব উদ্দিন বাহার। গাড়িটি নিয়ে রীতিমতো উপজেলাজুড়ে নির্বাচনি প্রচারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। যদিও কুতুবের দাবি, গাড়িটি তিনি শাহ আলম নামে একজনের কাছ থেকে রমজানের আগে কিনেছেন। এই শাহ আলম রেলওয়ের একজন শীর্ষ ঠিকাদার এবং যুবলীগ সন্ত্রাসী বাবরের ব্যবসায়িক অংশীদার। বিআরটিএর রেকর্ডে গাড়িটি শাহ আলমের নামেই নিবন্ধন করা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছর আগে শাহ আলম নিজেই দুবাই থেকে গাড়িটি আমদানি করেন। ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট বিআরটিএতে তার নামেই নিবন্ধন করে গাড়িটি উপহার দেন বাবরকে। সেই থেকে বাবরই গাড়িটি ব্যবহার করতেন। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতসহ একাধিক জায়গায় গাড়িটি নিয়ে বাবরের মহড়া দেওয়ার ভিডিও আমার দেশ-এর হাতে সংরক্ষিত আছে।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, গাড়িটির চেসিস নম্বর টিআরজে ১৫০-০১৬৮৮১১। সর্বশেষ ট্যাক্স দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ও বাবর গাড়িটি ব্যবহার করেছেন। সরকার পতনের পর পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকায় শাহ আলমের কাছে গাড়িটি রেখে যান তিনি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেলওয়ের ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিএনপি নেতাদের দ্বারে দ্বারে ধরনা দেন শাহ আলম। এক পর্যায়ে সন্ধান পান রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন বাহারের। শাহ আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা বাবরের গাড়িটি তিনি উপহার দেন বাহারকে। আমার দেশ-এর এই রিপোর্টার ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ লেগে থাকা সন্ত্রাসী বাবরের গাড়িটি আবিষ্কার করেন গত ৮ জুলাই। সেদিন জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাঙ্গুনিয়া বিএনপির শোডাউন ছিল। সেদিন বিএনপি নেতা বাহার পুরো উপজেলায় নির্বাচনি মহড়া দেন। কয়েকশ মোটরসাইকেলের মাঝে বিলাসী ছাদখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে উপজেলাবাসীকে শুভেচ্ছাও জানান তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা বাহার আমার দেশকে বলেন, ‘গাড়িটি আমি শাহ আলমের কাছ থেকে কিনেছি। এই রমজানের আগের রমজানেই কেনা।’ বাবরের ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাবর হয়তো অন্য কোনো গাড়ি ব্যবহার করতেন। একই রঙের অনেক গাড়িই তো আছে।’ পরে তিনি গাড়ি কেনার কিছু স্ট্যাম্প কপি এই রিপোর্টারের কাছে সরবরাহ করেন। তবে সেখানে কোনো তারিখ উল্লেখ ছিল না। দস্তাবেজ অনুযায়ী, গাড়িটি এক কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কিনেছেন তিনি।

বিআরটিএর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা বলেন, সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী কোনো গাড়ির মালিক গাড়িটি বিক্রি করলে হস্তান্তরের ৩০ দিনের মধ্যে বিআরটিএ থেকে নতুন মালিকানার নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় গাড়ি রাস্তায় চালানো আইনত অবৈধ।

জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, এক বছর আগে জালাল উদ্দিন নামে ঢাকার এক ব্যক্তির কাছে গাড়িটি বিক্রি করেন তিনি। তবে গাড়িটি বাবর ব্যবহার করতেন কি না, এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ