চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় হাঁটার সময় চায়না খাতুন (৬৩) নামের এক বৃদ্ধা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান।
মায়ের মৃত্যু দেখে ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৫) হাসপাতালেই মাথা ঘুরে পড়ে যান। দ্রুত তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে মা ও ছেলের মৃত্যু—এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখার পর হাসপাতালের রোগী, তাদের স্বজন এবং ডিউটিরত নার্সদেরও কাঁদতে দেখা যায়।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে এই হৃদয়বিদারক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
বৃদ্ধা চায়না খাতুন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার মৃত আলাউদ্দিনের স্ত্রী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে চায়না খাতুন নিজ এলাকায় হাঁটাচলা করছিলেন। এ সময় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ডিউটিরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রোমানা খাতুন বলেন, বৃদ্ধা নারীকে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসককে জানানো হয়। পরে জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে, ওই নারীর জন্য ওষুধ কিনতে তার ছেলেকে ফার্মেসিতে পাঠানো হয়। ছেলে এসে মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরবর্তীতে তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকেও মৃত ঘোষণা করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ইসরাত জেরিন জেসিকা বলেন, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত মায়ের চিকিৎসা চলছিল হাসপাতালে। পরে মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছেলে সাইফুল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১০ মিনিটের ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, এমন মৃত্যু খুবই কম দেখেছি। আমাদেরও অনেক খারাপ লাগছে। ডিউটি করতে গিয়ে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হতে হলো।