চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মাথার খুলিতে সাদা ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। সংঘর্ষে মাথায় রামদার কোপ লেগেছে। চিকিৎসকরা খুলির একাংশ খুলে ফ্রিজে রেখেছেন। কেউ যাতে ভুলে সেখানে হাত না দেয়, তাই কালো কালিতে ব্র্যান্ডেজে লেখা হয়েছে, হাড় নেই, চাপ দেবেন না।
জানা যায়, বর্তমানে নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি তিনি। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তার মাথায় খুলি এখনো জোড়া লাগেনি।
মামুনের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা দেড়টায় পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বলেন, কেউ যাতে ভুলে হাত না দেয়, তাই কালো কালিতে এমন নির্দেশনা লিখে দেওয়া হয়েছে। মামুনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তিনি খাবার খেয়েছেন।
গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মামুন মিয়াসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদেরকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ গত পাঁচ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তাঁর কনশাস লেভেল এখন ৬-এর আশপাশে। একজন স্বাভাবিক মানুষের কনশাস লেভেল ১৫। এটি ১০-এর ওপরে ওঠার আগপর্যন্ত তাঁকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরের ভাসকুলার ইনজুরি রয়েছে বলেও চিকিৎসকেরা জানান।
গত রোববার সংঘর্ষের সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপ পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে আনা হলে ওই দিন রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁকে কেবিনে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে পরদিন রোববার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। সংঘর্ষে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন।