শিরোনাম
জেলের ছদ্মবেশে অ্যাসিড নিক্ষেপ মামলার আসামিকে ধরল পুলিশ ভিডিওর কমেন্ট থেকে নম্বর নিয়ে পরিচয়, ২২ দিনেই বিয়ে; ব্যতিক্রমী ভালোবাসার গল্প প্রতিবন্ধী মাহফুজ-ইনায়ার কোটালীপাড়ায় আ.লীগের ১৬৫৫ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা, গ্রেপ্তার ১২ চাঁদা দাবির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় কুড়িগ্রামের সেই জামায়াত নেতা বহিষ্কার কালীগঞ্জে গাঁজাসহ জামাই-শ্বশুর গ্রেপ্তার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৪ জুলাই, বাড়ছে ফি ট্রেনের ৩২ লাখ টাকা ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ করেছে জামায়াত, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি বেরোবির ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ লাল কাপড়ে ঢেকে দিলেন শিক্ষার্থীরা সরকার এক দলকে কোলে নিয়ে আছে, আরেক দলকে কাঁধে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে আমন্ত্রণ পেয়েছে বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

ভিডিওর কমেন্ট থেকে নম্বর নিয়ে পরিচয়, ২২ দিনেই বিয়ে; ব্যতিক্রমী ভালোবাসার গল্প প্রতিবন্ধী মাহফুজ-ইনায়ার

ডেস্ক রিপোর্ট / ৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

ভালোবাসা এক সুন্দর অনুভূতি, যা জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে। যেখানে ভালোবাসা আছে, সেখানেই জীবন আছে। প্রকৃত ভালোবাসা কোনো শর্ত মানে না, কোনো কারণ খোঁজে না। এখনো কিছু সম্পর্ক আছে, কিছু গল্প আছে—যা হৃদয় ছুঁয়ে যায়, চোখ ভিজিয়ে দেয়। এমনই এক ব্যতিক্রমী ও মানবিক ভালোবাসার গল্প তৈরি হয়েছে এক শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী যুবক এবং এক অজানা তরুণীর মধ্যে।

এই গল্পটি শুরু হয় একটি অনলাইন নিউজের মাধ্যমে—যেখানে গরিব ও অসহায় মানুষদের সেবায় নিয়োজিত এক প্রতিবন্ধী যুবকের নিঃস্বার্থ কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছিল।

২০২৪ সালে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ ২৪-এ প্রচারিত সেই সংবাদের দৃশ্য দেখে হৃদয়ে দাগ কাটে দিনাজপুরের তরুণী মুনতাহা ইনাইয়ার। সংবাদের ভেতরে মাহফুজুর রহমান রানার ছবি, তার কাজের বর্ণনা এবং মানুষের জন্য তার অক্লান্ত শ্রম দেখে মুগ্ধ হন তিনি। সংবাদের নিচে কমেন্ট বক্সে থাকা একটি ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তিনি যোগাযোগ করেন মাহফুজের সঙ্গে।

প্রথমে শুধু কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেই একটিবার যোগাযোগের পর শুরু হয় এক মানবিক ভালোবাসার যাত্রা। যেটি মাত্র ২২ দিনের মধ্যেই পরিণতি পায় বিবাহে।

ইনাইয়া বলেন, ‘নিউজে দেখছিলাম মাহফুজ ভাই অনেক গরিব মানুষকে খাওয়াচ্ছেন।

ওনার কাজে ভালো লেগে যায়। এরপর দেখি কমেন্ট বক্সে উনার নম্বর দেওয়া। আমি নম্বরটা নেই, যোগাযোগ করি, আর্থিকভাবে কিছুটা সহযোগিতা করি। তারপর থেকেই শুরু হয় আমাদের কথা বলা।’

মাত্র ২২ দিন ফোনে কথা বলার মধ্যেই দুজনের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেয়।

এক পর্যায়ে মাহফুজ ইনাইয়াকে মসজিদে বসে ভিডিও কলে বলেন, ‘আমি তোমারে ভালোবাসি, কখনো কষ্ট দেব না।’ ইনাইয়া বলেন, তখনই মনে হলো—ভালোবাসা সত্যিই এমনই হয়।

এরপর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ইনাইয়ার পরিবার শুরু থেকেই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। অনেক বোঝানোর পরও যখন পরিবার রাজি হয়নি, তখন এক কাপড়ে মাহফুজের কাছে চলে আসেন তিনি। ইনাইয়া বলেন, ‘আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে এসেছি, কারণ উনি মসজিদে বসে কথা দিছে।’

বিয়ের পর শুরু হয় এক অন্যরকম জীবনের গল্প। মাহফুজ বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমাকে সব কাজে সাহায্য করে। আমি যা পারি না, সে নিজে করে দেয়। গোসল করায়, খাওয়ায়, নামাজে সাহায্য করে। আমি আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া আদায় করি, কারণ আমার স্ত্রী একজন আশীর্বাদ।’

এ দম্পতির ভালোবাসা এলাকাবাসীকেও মুগ্ধ করেছে। তারা জানান, এমন ভালোবাসা এই সময়ে বিরল। যেখানে মানুষ সামান্য কষ্টে সম্পর্ক ছেড়ে দেয়, সেখানে ইনাইয়া সব কিছু ত্যাগ করে মাহফুজের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

জন্মের দুই বছর পরই মাহফুজ পোলিও রোগে আক্রান্ত হন। সেই থেকেই চলাফেরা করেন দুই হাতে ভর দিয়ে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তিনি কখনো ভেঙে পড়েননি। বরং নিজের সামর্থ্যে গরিব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বর্তমানে মাহফুজ চান একটি খামার গড়ে হালাল উপার্জনে জীবন চালাতে। তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আমার স্ত্রীকে নিয়ে একটি কর্ম করে খেতে। যদি কেউ একটা খামারের ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব। আমি হালাল পথে বাঁচতে চাই, স্ত্রীকে নিয়ে সুন্দর একটা জীবন গড়তে চাই।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ