পাকিস্তানের বিভিন্ন বেসামরিক অঞ্চলে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি একে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে এই হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘ওভাল অফিস ছাড়ার সময় আমরা এই খবর শুনেছি। এটা খুবই লজ্জার।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই দেশ দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতে জড়িত। তাই অনেকেই আগেই বুঝেছিল—কিছু একটা ঘটতে চলেছে।’
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এমন ধরনের সংঘর্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতের সামরিক তৎপরতা গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা দুই দেশের কাছ থেকেই সর্বোচ্চ সংযত আচরণ প্রত্যাশা করি।’
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, উপমহাদেশে নতুন করে কোনো সামরিক উত্তেজনা বিশ্ব চাইছে না। পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার পর পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের কোটলি, ভাওয়ালপুর, বাগ, মুরিদকে ও মুজাফফরাবাদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৮ জন নিহত হন এবং আহত হন আরও ৩৫ জন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলায় নিহতদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ভারত কাপুরুষের মতো তাদের নিজস্ব আকাশসীমা থেকেই হামলা চালিয়েছে। তারা আমাদের মাটিতে না এসেই সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন ঝরিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান এর যোগ্য জবাব দেবে এবং তা হবে আরও বড় পরিসরে। তার ভাষায়, ‘তারা যেভাবে সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা করেছে, তা শুধু উসকানি নয়—একটি স্পষ্ট যুদ্ধ ঘোষণা।’
এই হামলার জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের এই সামরিক অভিযানকে তারা নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে, যেখানে কোনো সামরিক স্থাপনা টার্গেট করা হয়নি।
তবে বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেসামরিক এলাকার মসজিদ, ঘরবাড়ি ও রাস্তায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এতে শিশুসহ বহু নিরীহ মানুষ হতাহত হয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স