প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, শুকনো মৌসুমে ধুলোবালু আর বর্ষায় কর্দমাক্ত। দীর্ঘদিন ধরে পাকা না হওয়ায় বেহাল রাস্তাটি। ক্ষোভে প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার (১১আগস্ট) সকালে এই রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়েছেন উপজেলা শহীদবাগ ইউনিয়নের ভূতছাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ভেলুপাড়া বাজার থেকে জলিলের বাড়ি পর্যন্ত কাঁচা রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার। এ রাস্তায় মাঝে মাঝে হাঁটুসমান কাদা-পানি মাড়িয়ে প্রাইমারি স্কুল- হাই স্কুল, যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়া মসজিদ ও সামাজিক কবরস্থান সহ গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি মরদেহ দাফনের জন্য গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর।
এছাড়া ভুতছাড়া গ্রামের হাজার হাজার একর জমির ফসল এ রাস্তা দিয়েই আনা-নেওয়া করেন শত শত কৃষক। কৃষিপণ্য বাজারজাত করতেও একই সড়ক ব্যবহার করতে হয় তাদের। এজন্য ভেলুপাড়া বাজার থেকে জলিলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয়রা এ ব্যতিক্রমী প্রতিবাদের সাথে রাস্তাটি দ্রুত পাকা করনের কাজ শুরু করার দাবি জানান, কেননা এই রাস্তাটি দিয়ে প্রাইমারি স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ নিদারুণ কষ্টে এ পথে চলাচল করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় কাদায় পড়ে গিয়েছি। আমরা দ্রুত এই রাস্তাটির পাকা চাই।”
মো: ইদ্রিস আলীর সাথে কথা বললে , তিনি জানান আমার জীবনে এ রাস্তায় কোনো উন্নয়ন দেখিনি। উন্নয়নবঞ্চিত ভূতছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষের আবাদী ফসল বৃষ্টির দিনে হাটবাজারে নেয়া কষ্টকর হয়।
তীব্র প্রতিবাদে চারা লাগানোর সময় এমদাদুল হক, করিম উদ্দিন, রাসেদ মিয়া উপস্থিত জনগণ আক্ষেপ করে বলেন, যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না, সেটা রাস্তা নয়, ক্ষেত। তাই ধানের চারা লাগাচ্ছি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহুবার বিষয়টি কতৃপক্ষের নজরে নিয়ে আসা হলেও তারা আশ্বাস ছাড়া কিছুই দেয়নি। ফলে দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ থেকেই এই নীরব প্রতিক্রিয়া।
এদিকে এই প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মাঝে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। অনেকেই বলছেন, এভাবে প্রশাসনের টনক না নড়লে সাধারণ মানুষ আর কী করবে? এলাকাবাসীর দাবি হাজার হাজার লোকের চলাচলের লাল মাটির কাঁচা রাস্তাটি পাকা করে জনদুর্ভোগ লাঘব এগিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, জানান,রাস্তাটির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ পেলে যত দ্রুত সম্ভব টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, বরাদ্দ এলে যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা পাকা করনের কাজ শুরু করা হবে।